নাগেরবাজারের কাজীপাড়ায় বিস্ফোরণ।—ফাইল চিত্র।
এক বছর পরেও সমাধান হল না নাগেরবাজারের কাজীপাড়ায় বিস্ফোরণ রহস্যের। আদৌ রহস্যের সমাধান হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীদের একাংশ। গত বছর ২ অক্টোবর ওই বিস্ফোরণে এক শিশু-সহ চার জন মারা যান। আহত হন ছ’জন। কিন্তু সেই ঘটনার চক্রী কারা, তার কোনও হদিস এক বছরে পাননি তদন্তকারীরা। ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। কিন্তু এখনও তেমন গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মেলেনি।’’
গাঁধী জয়ন্তীর দিন সকাল ৯টা ১০ মিনিট নাগাদ কাজীপাড়ার এক ফল বিক্রেতার দোকানের কাছে ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট দাবি করে, সকেট বোমা ফেটেছে। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি-র বম্ব ডিটেকশন ও ডিসপোজাল স্কোয়াড লোহার পাইপ উদ্ধার করেছিল। তার পরেই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তবে ঠিক কী ধরনের বোমা ফেটেছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য মেলেনি। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ঘটনার পরে রাজ্য ফরেন্সিক বিভাগকে ডাকা হয়নি। দু’দিন পরে সিআইডি কেন্দ্রীয় ফরেন্সিককে ডেকেছিল। তার আগেই ঘটনাস্থল জল দিয়ে ধুয়ে দিয়েছিল স্থানীয় থানা। ফলে ফরেন্সিক কার্যত কোনও নমুনা পায়নি।
সিআইডি-র একটি অংশের দাবি, স্থানীয় পুলিশের ‘গাফিলতি’র জেরেই ফরেন্সিক নমুনা মেলেনি। তার উপরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ফল ব্যবসায়ী অজিত হালদার। তিনি মারা যাওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানও পাওয়া যায়নি। যার জেরে পুরো ঘটনা অন্ধকারে রয়েছে। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, ওই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রায় একশো জনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খাপছাড়া কিছু সূত্র মিলেছিল বটে। কিন্তু সেগুলি জোড়া লাগিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, মৃত্যুর আগে অজিতের সঙ্গে এক বার কথা বলা সম্ভব হয়েছিল। তাঁর কথাতেও কিছু সূত্র ছিল। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর কারণে সেই সূত্র ধরে এগোতে পারেননি তদন্তকারীরা।
তদন্তের ক্ষেত্রেও কিছু ‘গাফিলতি’ দেখছেন পুলিশের একাংশ। তাদের দাবি, বিভিন্ন দলে ভাগ করে তদন্ত শুরু করা হলেও সেই দলগুলির মধ্যে কোন সমন্বয় তৈরি হয়নি। ফলে কেউ কোনও তথ্য পেলে তা অন্য দল জানতে পারেনি। তদন্তকারী দলের দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যে। নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করেই তদন্ত করেছিলেন।