—প্রতীকী চিত্র।
একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেল থেকে উদ্ধার হল এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ।
বুধবার সকালে আনন্দপুরের এই ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। যৌথ ভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুর থানা এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। খতিয়ে দেখার চেষ্টা হচ্ছে ছাত্রীর ফিঙ্গার লক হয়ে থাকা মোবাইল ফোনটিও।
পুলিশ জানায়, ছাত্রীটির নাম শাবানা (২০)। তিনি আদতে ঝাড়খণ্ডের বোকারোর বাসিন্দা। তাঁর পরিবারকে খবর দিয়ে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে সুইসাইড নোট উদ্ধার না হওয়ায় এই ঘটনাটি নিছক আত্মহত্যা, না কি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তদন্তকারীরা। মৃত্যুর কারণ জানতে ছাত্রীর দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, কলা বিভাগের ওই ছাত্রী এ দিন সকালে হস্টেলে নিজের ঘরের দরজা বহু ক্ষণ না খোলায় অন্য সহপাঠীরা তাঁকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু ঘর থেকে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁরা হস্টেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। এর পরেই দরজা খুলে সকলে শাবানার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান।
কলেজ সূত্রের খবর, ওই ছাত্রী হস্টেলের চারতলায় এক সহপাঠীর সঙ্গে থাকতেন। সেই সহপাঠী পুজোর ছুটিতে বাড়ি যাওয়ায় শাবানা একাই ছিলেন। হস্টেলের অন্য আবাসিকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতেও শাবানার আচরণে কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেননি তাঁরা। অন্যদের সঙ্গে তিনি স্বাভাবিক ভাবে কথাও বলেছেন।
পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার এক আবাসিকের ঘরে বসে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত গল্পগুজব করেন শাবানা। তার পরে নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যান। সাধারণত ওই ছাত্রী সকালেই ঘুম থেকে উঠতেন। কিন্তু এ দিন আটটা বেজে গেলেও তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ দেখে আবাসিকেরা ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু শাবানা সাড়া না দেওয়ায় এবং দরজা না খোলায় সহপাঠীরা হস্টেলের ওয়ার্ডেনকে খবর দেন। তিনিও এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাড়া পাননি। তখন দরজা ভাঙা হয়।
ওই ছাত্রীর মৃত্যুর রহস্য ভেদ করতে তাঁর মোবাইলটি খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ। কিন্তু ফিঙ্গার লক থাকায় সেটি বুধবার রাত পর্যন্ত খোলা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, ছাত্রীটি আত্মঘাতী হয়েছেন। এর পিছনে প্রেমঘটিত কিংবা পড়াশোনার চাপ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শাবানার ঘর থেকে কয়েকটি ডায়েরিও উদ্ধার হয়েছে।
ওই বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কালীপুজোর জন্য চার দিন কলেজ বন্ধ ছিল। হস্টেলের অনেকে বাড়ি চলে গেলেও ওই ছাত্রী যায়নি। মেয়েটি খুব হাসিখুশি ছিল। এমন ঘটনা আমরা ভাবতেই পারছি না।’’