তরুণী কি নিজেই সদ্যোজাত সন্তানকে শৌচাগারের জানলা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন? না কি, তাঁকে বাধ্য করা হয়েছিল? প্রতীকী ছবি।
তরুণী কি নিজেই সদ্যোজাত সন্তানকে শৌচাগারের জানলা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন? না কি, তাঁকে বাধ্য করা হয়েছিল? কসবা থানা এলাকার পিকনিক গার্ডেনে নবজাতক-মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও এখনও সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা। ধোঁয়াশা কাটাতে ওই তরুণী এবং তাঁর স্বামীকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। তবে গোটা ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের অন্দরে।
এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্ত তরুণী এবং তাঁর স্বামীর মানসিক সমস্যা রয়েছে মনে করা হলেও তাঁদের কোনও চিকিৎসা চলত কি না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। উত্তর পেতে ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলতে চাইছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে ধীরে চলো নীতিতে এগোতেচাইছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ওই তরুণীর স্বামী দাবি করেছিলেন, তিনি কিছুইজানতেন না। কিন্তু তা-ই যদি হয়, তা হলে কেন গোটা ঘটনার পরে তিনি প্রতিবেশীদের ডাকলেন না, তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে পুলিশের অন্দরে। আদৌ তরুণীকে এমন ঘটনা ঘটাতে বাধ্য করা হয়েছিল কি না, সেইপ্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
শনিবারের ওই ঘটনার পরে ই এম বাইপাসের ধারে একটিবেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ওই তরুণী মাকে। তিনি কিছুটা সুস্থ হলে মঙ্গলবার তাঁকে একটি সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে তাঁকে কবে ছাড়া হবে, সে দিকেও নজর রাখছেন তদন্তকারীরা। চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে ওই দম্পতিকে একসঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে গোটা ঘটনায় দুই পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাও প্রশ্ন তুলেদিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওই দম্পতির সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল না। এমনকি তরুণী যে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, সে কথাও পরিবারের অন্য সদস্যেরা জানতেন না বলেই দাবি করেছেন। কিন্তু বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ছেলে-বৌমা থাকলেও কেন বিষয়টি তাঁদের নজরে পড়ল না, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘এক জন অন্তঃসত্ত্বা হলে তাঁর শারীরিক গঠন থেকে শুরু করে আরও অনেক দিকে পরিবর্তন আসে। গোটা বিষয়টি পরিবারের কারও নজরে পড়ল না, তা হতে পারে না। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’