Mysterious Death

অনুশীলনের সময়ে মৃত্যু কিশোরী সাঁতারুর, ধন্দ কারণ নিয়ে

পুলিশ জেনেছে, জলের নীচে সর্বাধিক কত ক্ষণ দম ধরে রাখা যায়, তারই অনুশীলন করছিল ওই কিশোরী। সঙ্গে অন্য সাঁতারুরাও ছিলেন। নির্দিষ্ট সময় পরে বাকিরা জলের নীচ থেকে উঠে এলেও এলিনা ওঠেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ০৭:৪৭
Share:

এলিনা দত্ত ভট্টাচার্য।

সাঁতারের অনুশীলন চলাকালীন জলের নীচে অচৈতন্য হয়ে পড়ে মৃত্যু হল এক সাঁতারুর। মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকে, বিধাননগর পুরসভার সুইমিং পুলে। পুলিশের ধারণা, জলের নীচে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এলিনা দত্ত ভট্টাচার্য (১৫) নামে ওই সাঁতারুর। এ দিনই বিকেলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার দেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। ওই সাঁতারু ও তার মা গত দশ বছর ধরে ওই পুলে সাঁতার কাটছেন বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুরসভা।

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই সাঁতারু নিউ টাউনের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ত। তাদের বাড়ি সল্টলেকের এ ই ব্লকে। পুলিশ সূত্রের খবর, এলিনা জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ দিন সাঁতারের অনুশীলনে প্রশিক্ষকের পাশাপাশি তার মা ডালিয়া দত্তও উপস্থিত ছিলেন। তিনিও দক্ষ সাঁতারু বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জেনেছে, জলের নীচে সর্বাধিক কত ক্ষণ দম ধরে রাখা যায়, তারই অনুশীলন করছিল ওই কিশোরী। সঙ্গে অন্য সাঁতারুরাও ছিলেন। নির্দিষ্ট সময় পরে বাকিরা জলের নীচ থেকে উঠে এলেও এলিনা ওঠেনি। তখনই তার মা জলে ডুব দেন। অচৈতন্য অবস্থায় এলিনাকে উদ্ধার করে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা ওই কিশোরীকে মৃত বলে জানান।

Advertisement

এলিনার এক পরিজন জানান, ওই কিশোরী প্রতিদিনই চেষ্টা করত, জলের নীচে কত ক্ষণ দম বন্ধ করে থাকতে পারে। এ ভাবে নিজেই নিজের রেকর্ড ছাপিয়ে যেতে চেষ্টা করত সে। এ দিন তেমনই কিছু করতে গিয়েই হিতে বিপরীত হয়েছে কি না, সেটাই তাঁরা বোঝার চেষ্টা করছেন বলে ওই পরিজন জানিয়েছেন। এলিনার দাদু গৌরাঙ্গলাল দত্ত বলেন, ‘‘কারও বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। এটি দুর্ঘটনা। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’

ঘটনাটি শুনে একই সঙ্গে দুঃখিত ও বিস্মিত বিশিষ্ট সাঁতারু বুলা চৌধুরী। তিনি মনে করেন, বাচ্চারা এই ধরনের অনুশীলন করলে প্রশিক্ষকদের সতর্ক থাকা উচিত। বুলার কথায়, ‘‘ছোটবেলায় আমি এক বার অন্যদের টেক্কা দিতে জলের নীচে অনেক ক্ষণ দম আটকে বসেছিলাম। সবার শেষে উঠেছি। মনে হচ্ছিল, কলজে ছিঁড়ে যাবে। জলে নামার আগে যে কোনও সাঁতারুর ১০০ শতাংশ সুস্থতা প্রয়োজন। বাচ্চাটি কোনও সমস্যা নিয়ে নেমেছিল কি না, সেটা দেখতে হবে। এই বয়সে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার একটা খিদে ওদের মধ্যে কাজ করে। তার জন্য অনেক সময়ে তারা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ করে।’’ সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর বাড়িতে যান বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ঘটনার সময়ে প্রশিক্ষক ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা সুইমিং পুলে উপস্থিত ছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement