মৃতের নাম সুব্রত মাজি। ছবি: সংগৃহীত।
বিধাননগর কমিশনারেটের মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু
ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। বর্ষবরণের রাতে ওই যুবককে মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। একটি খুনের মামলাও রুজু করেছে স্থানীয় ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা। যুবকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তাঁর দেহের ময়না তদন্ত করানো হচ্ছে। ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহিষবাথানের উদয়নপল্লিতে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুব্রত মাজি (২৫)। তাঁকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সবুজ মিস্ত্রি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুব্রতর সঙ্গে অভিযুক্তের পুরনো গোলমাল ছিল বলে দাবি পুলিশের। যেখান থেকে মঙ্গলবার রাতে সুব্রতকে সঙ্কটজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখানে অভিযুক্ত হাজির ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত মৃত্যুর আগে ওই যুবক কোনও মদের আসরে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেই কোনও গোলমালের জেরে সুব্রত প্রহৃত হন বলে দাবি পুলিশের।
তদন্তকারীরা জানান, উদয়নপল্লিতে একটি ক্লাবের মাঠে মঙ্গলবার রাতে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় সুব্রতকে। একটি খাবার সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি বয় হিসাবে কাজ করতেন তিনি। উদ্ধারের সময়ে তাঁর মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক ভাবে ওই যুবক পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন বলে মনে করা হলেও, পরে তাঁর
পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের দাবি, সুব্রতের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতাল এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সেখানেই মারা যান সুব্রত।
সুব্রতের মা রীতা মাজি জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাতে বাইক নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বেরিয়েছিলেন তাঁর ছেলে। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি। রাত তিনটে-সাড়ে তিনটে নাগাদ স্থানীয় এক যুবক খবর দেন, এলাকার একটি ক্লাবের মাঠে আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সুব্রত। রীতা বলেন, ‘‘অনেক বার ছেলেকে বারণ করেছিলাম রাতে না বেরোতে। কথা শোনেনি। এই এক ছেলেই ছিল। আগে একটি ছেলে অনেক ছোটবেলায় হারিয়ে যায়। আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। আমি এ বার কাকে নিয়ে বাঁচব?’’
পুলিশ জানিয়েছে, সুব্রতকে খুন করা হয়েছে বলেই আপাতত মনে করা হচ্ছে। তাই খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত সবুজের সঙ্গে সুব্রতের আগেও গোলমাল হয়েছিল। যে মাঠ থেকে সুব্রতকে উদ্ধার করা হয়, ঘটনার সময়ে সেখানে সবুজ উপস্থিত ছিল বলেই স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে। ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ।