তিনটি ওয়ার্ড রাজ্যের তিন প্রান্তে। কিন্তু কাঁথির ১৫ নম্বর, বালুরঘাটের ২২ নম্বর ও ভাটপাড়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কী মিল? ওই তিনটি ওয়ার্ডে বাড়ি রাজ্য বিজেপি-র তিন শীর্ষনেতা যথাক্রমে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এবং অর্জুন সিংহের। ঘটনাচক্রে, এই তিন ওয়ার্ডেই তৃণমূলের বিক্রমের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি।
ফাইল ছবি।
তিনটি ওয়ার্ড রাজ্যের তিন প্রান্তে। কিন্তু কাঁথির ১৫ নম্বর, বালুরঘাটের ২২ নম্বর ও ভাটপাড়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কী মিল? ওই তিনটি ওয়ার্ডে বাড়ি রাজ্য বিজেপি-র তিন শীর্ষনেতা যথাক্রমে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এবং অর্জুন সিংহের। ঘটনাচক্রে, এই তিন ওয়ার্ডেই তৃণমূলের বিক্রমের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ কাঁথি পুরসভার অন্তর্গত ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই ‘অধিকারীগড়ে’ই তৃণমূলের তনুশ্রী চক্রবর্তী ২২৮ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীকে। অর্থাৎ, শুভেন্দুর দলের প্রার্থীকে।
একই অবস্থা রাজ্য বিজেপি-র বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ওয়ার্ডেও। সুকান্ত বালুরঘাটের নির্বাচিত সাংসদও বটে। এ বারের পুরভোট ছিল তাঁর কাছে কার্যত ‘সম্মানের লড়াই’। রবিবার পুরভোটে ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগে সোমবার রাজ্যে ১২ ঘন্টার বন্ধও ডেকে দিয়েছিলেন সুকান্ত। বুধবার ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, বালুরঘাট পুরসভা তো দূর অস্ত, নিজের বাড়ির ২২ নম্বর ওয়ার্ডেও পদ্মপ্রার্থী হাজার খানেক ভোটে হেরেছেন তৃণমূলের কাছে। অর্থাৎ, নিজের পাড়াতেও হারের মুখ দেখতে হল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতিকে।
তবে শুভেন্দু-সুকান্তের চেয়েও খারাপ অবস্থা ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের। তাঁর ‘দুর্গ’ ভাটপাড়ায় শোচনীয় ভাবে হেরেছে বিজেপি। অর্জুনের বাড়ি ‘মজদুর ভবন’ ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন সম্পর্কে অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিংহ। কিন্তু পুরভোটের ঠিক আগে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। বিজেপি-র মনোনয়ন প্রত্যাহার করে সৌরভ ও তাঁর বাবা সুনীল সিংহ তৃণমূলে ফেরেন। ফলে অর্জুনের বাড়ির ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটের আগেই জিতে গিয়েছিল তৃণমূল।
তবে এর মধ্যে ধারেভারে শুভেন্দুই সবচেয়ে এগিয়ে। প্রথমত, তিনি বিরোধী দলনেতা। দ্বিতীয়ত, শুভেন্দুকে তৃণমূলের নেতারাও ‘জননেতা’ বলে মনে করেন। তাঁর বাড়ির ওয়ার্ডে বিজেপি হেরে গেলে সেটি শুভেন্দুর পক্ষে ‘বিড়ম্বনা’র। প্রসঙ্গত, ভোটের কিছুদিন আগেই একটি ‘অডিও ক্লিপ’ ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানে এক পুরুষকণ্ঠ ‘শুভেন্দুর প্রার্থী’কে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ‘দেখে দেওয়া’র আবেদন জানিয়েছিলেন। ওই ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন জেলার রাজনীতিতে অধিকারীদের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি।
ওই পুরুষকণ্ঠের সঙ্গে শুভেন্দুর বাবা প্রবীণ রাজনীতিক শিশির অধিকারীর কণ্ঠের মিল রয়েছে বলে দাবি করেছিল শাসক তৃণমূল। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। ঘটনাটি তোলপাড়া ফেলেছিল মেদিনীপুরের রাজনীতিতে। সেই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডও থেকে জিতে গিয়েছেন সুপ্রকাশ। শুভেন্দু বিজেপি-তে যাওয়ার পর থেকে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভার দিয়েছেন অখিলের হাতেই।
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের এলাকার দু’টি পুরসভার (মেদিনীপুর ও খড়্গপুর) দখল নিয়েছে তৃণমূল। তবে দিলীপ পুর এলাকার বাসিন্দা নন। দিলীপের আদি বাড়ি গোপীবল্লভপুরে। গত বছর বিধানসভা ভোটে সেখানে অবশ্য হেরে গিয়েছিল বিজেপি।