KMC

পুরসভায় পদোন্নতির ক্ষেত্রে একাধিক ‘অনিয়ম’, বিতর্ক

৩ মার্চ পুরসভার পার্সোনেল দফতর থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে যে ১০ জন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছ’জনই তফসিলি জাতিভুক্ত।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২১ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা পুরসভার সিভিল বিভাগে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের পদ থেকে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের শূন্য স্থায়ী পদে পদোন্নতি বন্ধ ছিল গত পাঁচ বছর। সমস্যার সমাধানে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ নিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযোগ, অ্যাডভোকেট জেনারেল যা মতামত দিয়েছিলেন তা মানা হয়নি।

Advertisement

শুধু তাই নয়। ২০১৬ সাল থেকে সিভিল বিভাগে দশ জন ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পদ ফাঁকা ছিল। চলতি বছরের ৩ মার্চ পুরসভার পার্সোনেল দফতর থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে যে ১০ জন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছ’জনই তফসিলি জাতিভুক্ত। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি আটকে থাকায় পুরসভার তরফে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত গত ২০ জানুয়ারি চার পাতার নোটশিটে পুরসভাকে জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ তফসিলি জাতি ও জনজাতি সংরক্ষণ আইন, ১৯৭৬’ মেনে পদোন্নতির তালিকা তৈরি করতে হবে। স্থায়ী ১০টি শূন্য পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনটি সংরক্ষিত এবং কোনটি অসংরক্ষিত পদ থাকবে, তা-ও স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। ওই আইন অনুযায়ী তফসিলি জাতির ক্ষেত্রে ২২ শতাংশ ও তফসিলি জনজাতির ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ সংরক্ষণের আওতায় থাকবেন। সেই হিসেবে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার থেকে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দশটি শূন্য পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তিনটি সংরক্ষিত এবং সাতটি অসংরক্ষিত পদ থাকার কথা।

Advertisement

কিন্তু গত ৩ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, ১০ জন ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের মধ্যে ছ’জনই তফসিলি জাতিভুক্ত। শুধু তাই নয়, তাঁদের মধ্যে চার জন জুনিয়র হলেও পদোন্নতি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুরসভার কর্মী ও আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদোন্নতিতে অ্যাডভোকেট জেনারেলের নির্দেশ মানা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ তফসিলি জাতি ও জনজাতি সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ২৮ শতাংশ এমন সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন। কিন্তু বাস্তবে ১০ জনের মধ্যে ছ’জন অর্থাৎ ৬০ শতাংশ কর্মীকে সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। যা নিয়মবিরুদ্ধ।’’

পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার বলেন, ‘‘যে ভাবে নিয়ম না মেনে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ হয়েছে।’’ পুরসভার শ্রমিক কর্মচারী সঙ্ঘের (বিজেপি) সাধারণ সম্পাদক অশোক সিংহের অভিযোগ, ‘‘অ্যাডভোকেট জেনারেলের মত না মেনে
পুরসভা একতরফা ভাবে পদোন্নতির তালিকা তৈরি করেছে।’’ যদিও পুর কমিশনার বিনোদ কুমার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম এবং আইন
মেনেই পদোন্নতির তালিকা তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তফসিলি জাতি ও জনজাতি কমিশনের পরামর্শ মেনে চলা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement