এই বিছানাতেই ছিল শিশুকন্যা সানিয়া মালো। —নিজস্ব চিত্র
প্রজাতন্ত্র দিবসে মায়ের হাতে খুন হল দু’মাসের এক শিশুকন্যা। শিশুকন্যাটিকে মেরে শুকনো ম্যানহোলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সন্ধ্যা মালো নামে ওই মহিলাকে। রবিবার বেলেঘাটায় পুলিশের ইএসডি ডিভিশনের সদর দফতরের কাছে একটি বহুতলের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে শিশুকন্যা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু সন্দেহজনক তথ্য পেয়েছিল পুলিশ। সেই সূত্র ধরে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে রাতে আসল ঘটনা জানা যায়। ওই ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুর দেহ। কেন মহিলা নিজের কন্যাসন্তানকে খুন করলেন তা জানতে জেরা করছে পুলিশ। তবে একটি সূত্রের দাবি, কন্যা সন্তান হওয়ার 'হতাশা' থেকে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দেশের সংবিধান চালু হওয়ার সাত দশক পরেও খাস কলকাতা শহরে এমন ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই নানা মহলে প্রশ্ন তুলেছে।
পুলিশ জানায়, এ দিন ওই মহিলা শিশুকন্যার আয়ার সঙ্গে বাড়িতেই ছিলেন। দুপুরে আয়া ছাদে গিয়েছিলেন। কিছু ক্ষণ পরে মহিলার শ্বশুর এসে দেখেন, পুত্রবধূ আচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে আছেন। ঘরে শিশু নেই। সে সময়ে আয়া এসে চিৎকার করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশের বিকৃত ম্যাপ! তুমুল বিতর্কে কলকাতা পুরসভা
সন্ধ্যা প্রথমে দাবি করেছিলেন, আয়া ছাদে যাওয়ার পরে কলিং বেল বেজেছিল। বাইরে থেকে আসা এক যুবক জানিয়েছিল, আয়া ছাদের দরজার চাবি চাইছেন। তিনি দরজা খুলতেই ওই যুবক তাঁকে ধাক্কা মেরে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন ছিল পুলিশের। প্রথমত, যুবক কী ভাবে জানল যে আয়া ছাদে গিয়েছেন? পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, আয়ার ছাদের চাবি দরকার হলে তিনি নিজে না এসে অন্যকে পাঠাবেন কেন? তা হলে কি যুবকের গলা অপহৃত শিশুটির মায়ের পরিচিত ছিল? আরও প্রশ্ন, নির্ঝঞ্ঝাটে শিশুটিকে নিয়ে পালানো যাবে, এ বিষয়ে নিশ্চিত না-হলে পুলিশের দফতরের নাকের ডগায় কে এই ঝুঁকি নেবে? পুলিশ জানিয়েছে, এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পুরো ঘটনা সামনে আসে। সন্ধ্যাকে আচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিলেন তাঁর শ্বশুর। এই প্রসঙ্গে একটি সূত্রের দাবি, সন্তানকে খুন করে নিজেই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন সন্ধ্যা। তাৎক্ষণিক আক্রোশবশত অপরাধ করলে এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয়।