নথির প্রতিলিপি যাচাইয়ের জন্য পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট নথি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে। —প্রতীকী চিত্র।
এ বার থেকে পাসপোর্টের আবেদন করার সময়ে জমা দেওয়া সমস্ত নথির প্রতিলিপি যাচাইয়ের জন্য পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট নথি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে। এর দায়িত্বে থাকবেন পুলিশের পাসপোর্ট অফিসার। সম্প্রতি এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছে লালবাজার। সূত্রের খবর, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র কিংবা কলেজ, স্কুল অথবা বোর্ডের শংসাপত্র কেউ জমা দিলে তা খালি চোখে যাচাই না করে সেটি ঠিক কিনা, জানতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। তাঁরা পরীক্ষা করে পাসপোর্ট অফিসারকে জানাবেন, সেই নথি আসল না ভুয়ো। এর পরেই তা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে লালবাজারের তরফে। কলকাতা পুলিশের এক অফিসার জানান, এর ফলে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি আটকানো যাবে। তবে, ওই রিপোর্ট কত দিনে আসবে, তার উপরে নির্ভর করবে পাসপোর্ট তৈরিতে কত সময় লাগবে।
বর্তমানে পাসপোর্ট পেতে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগে। পুলিশের একাংশের অনুমান, সমস্ত নথির প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যাচাইয়ের জন্য পাঠালে সেই সময় বাড়বে। নথি প্রদানকারী সংস্থা কর্তৃপক্ষ ভিন্ রাজ্যের হলে লাগতে পারে আরও বেশি সময়।
আগে পাসপোর্ট যাচাই করার ক্ষেত্রে থানার ওসিদের আরও সতর্ক হতে নির্দেশ দিয়েছিল লালবাজার। বলা হয়েছিল, আবেদন জমা নেওয়ার আগে থানায় সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে হবে ওসিদের। শুধু তা-ই নয়, পাসপোর্ট যাচাইকরণের সার্বিক প্রক্রিয়া খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছিল সহকারী নগরপাল ও ডিভিশনাল উপ নগরপালদের। লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, অনেকে অপরাধের তথ্য লুকিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করেও তা পেয়ে যাচ্ছে। এই প্রবণতা বন্ধ করতে পাসপোর্ট অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভিন্ রাজ্যের পুলিশের থেকে আবেদনকারীর নামে কোনও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে।
ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি ঠেকাতে ইতিমধ্যেই আবেদনকারীর দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে তা যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ অফিসারদের। এ বার তার সঙ্গে ঠিকানায় পৌঁছে সেখানকার ছবিও তুলতে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট অ্যাপে। যাতে ঠিকানার অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ আপলোড হয়ে যায়। পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যাবে, থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পাসপোর্ট অফিসার ওই ঠিকানায় সশরীরে গিয়েছিলেন কিনা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধ ভাবে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করিয়ে, তাদের ভুয়ো নথি জমা নিয়ে তা দিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। তার পরেই এই কঠোর নিয়ম চালু করা হয়েছে বলে খবর।