ককপিটে কাচে চিড়। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে বঙ্গোপসাগরের জোলো হাওয়া, অন্য দিকে উত্তরের ঠান্ডা বাতাস। এই দুইয়ের গলাগলি মিলনেই মঙ্গলবার বৃষ্টি ঝরল কলকাতায়, রাজ্যের অন্যত্রও। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বয়েছে দমকা হাওয়া। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, পুরুলিয়া-সহ পশ্চিমাঞ্চল এবং তরাই, ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে, বইতে পারে দমকা হাওয়া।
এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ শিলাবৃষ্টি শুরুর মুখেই কলকাতা থেকে ১৭৩ জন যাত্রী নিয়ে বাগডোগরার দিকে উড়ে যায় এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার বিমান। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শিলার আঘাতে চিড় ধরে যায় তার ককপিটের সামনের কাচে। ৪টে ৩১ মিনিটে উড়ে ৪টে ৩৬ মিনিটে কলকাতার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) সব জানিয়ে ফেরার অনুমতি চান পাইলট। ৪টে ৫০ মিনিটে বিমান ফিরে আসে কলকাতায়। পরে আগরতলা থেকে আসা এয়ারবাস-৩২০ বিমানে আটকে পড়া যাত্রীদের বাগডোগরা পাঠিয়ে দেয় উড়ান সংস্থা।
ওই বিমানে ছিলেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ককপিটের কাচে চিড় ধরার পরে পাইলট যাত্রীদের জানান, জরুরি কারণে ফিরতে হচ্ছে কলকাতায়। পরে বাগডোগরা থেকে অরূপবাবু জানান, বিমানে বসেই শিলাবৃষ্টির দাপট মালুম হয়েছে। মনে হচ্ছিল, বিমানে অগুনতি ঢিল মারা হচ্ছে। ‘‘যাত্রীরা বেশ ভয় পেয়ে যান। কয়েক জনকে সামনের আসন আঁকড়ে ধরে বসে থাকতে দেখা যায়। কলকাতায় ফেরার সময় বিমানটি বার বার ডান ও বাঁ দিকে কাত হয়ে যাচ্ছিল,’’ বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: কর্তাদের ঘুষের ব্যবসা! বারুইপুর জেলে বন্দি-তাণ্ডব, দেখুন সেই ভিডিয়ো
কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বঙ্গোপসাগরে একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত থাকায় জোলো হাওয়া ঢুকছে। আবার উত্তুরে বাতাসও আসছে। দুইয়ের মিলনে তৈরি হচ্ছে মেঘ। বসন্তকাল শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। তার ফলে বাতাস গরম হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে উঠে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে হামলা অধীরের বাড়িতে, আক্রান্ত কর্মীরা, নথিপত্র তছনছ
অনেক আবহবিজ্ঞানী বলছেন, এই সময়ে বায়ুমণ্ডলের দু’টি স্তরে তাপমাত্রার ফারাক বেশি থাকে। তার ফলে নীচের গরম বাতাস উপরে উঠে ঠান্ডায় দ্রুত ঘনীভূত হয়ে বড় আকারের বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি করে। এ দিন সেটাই হয়েছে। কলকাতায় বৃষ্টির জল বরফশীতল ছিল। সেই জল গায়ে পড়তে অনেকেই শিউরে উঠেছেন। বৃষ্টির জেরে রাতে বেশ শীত-শীত ভাব মালুম হয়েছে।