এরকম যন্ত্র বসানো হবে গাড়িতে।—ছবি সংগৃহীত।
টহলদারির গাড়িতে বসে পুলিশকর্মীরা নজরদারি চালান। কিন্তু যে-বিপদ খালি চোখে দেখা যায় না, তাকে তাঁরা শনাক্ত করবেন কী ভাবে? পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, তেজস্ক্রিয় বিপর্যয় ঘটলে তার মাত্রা খালি চোখে কোনও মতেই ধরা পড়বে না। তাই তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ধরতে পুলিশের গাড়িতে বসানো হচ্ছে নতুন ‘চোখ’।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বন্যা, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ)-এর অধীনে একটি প্রকল্প আছে। সেই প্রকল্পেই কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে তেজস্ক্রিয়তার বিপর্যয় সামলানোর পাঠ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞেরা। সেই প্রকল্পের অধীনেই পুলিশের গাড়িতে বসানো হচ্ছে ‘মোবাইল রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম’ (এমআরডিএস) নামে একটি যন্ত্র। রাজ্য স্তরে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশকে।
পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যন্ত্র যে-গাড়িতে বসানো থাকবে, তা কোনও তেজস্ক্রিয় বস্তু বা তেজস্ক্রিয়তার উৎসের কাছে গেলেই সতর্কবার্তা মিলবে এবং সেই উৎসটি চিহ্নিত করে দেবে। কী ভাবে সেই তেজস্ক্রিয়তার মোকাবিলা করতে হবে, তারও পাঠ নিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। প্রশিক্ষণের ব্যাপারে গত ১০ জুন ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর কমিশনারেট মিলিয়ে মোট ৬০টি গাড়ি দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৫৬টি গাড়ি বিভিন্ন থানায় থাকবে। শুধু কলকাতাতেই থাকছে ৪৬টি গাড়ি। তার মধ্যে দু’টি গাড়ি লালবাজারে থাকবে। অন্য দু’টি গাড়ি থাকবে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে কলকাতার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দফতরে। বাকিগুলি বিভিন্ন থানায় রাখা হবে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি গাড়িতে এমআরডিএস যন্ত্র বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সম্ভাব্য জঙ্গি হানার মোকাবিলায় এই প্রকল্পের প্রস্তাব আগেই নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি দেশ জুড়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানান, এ রাজ্যের বিমানবন্দর, রেল স্টেশন-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কথা ভেবে গাড়িগুলি মোতায়েন করা হয়েছে। জঙ্গি হানার বাইরে বড় হাসপাতাল, গুদাম, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রে দুর্ঘটনা বা বিভ্রাটের ফলেও তেজস্ক্রিয়তার বিপদ ঘটতে পারে। তাই থানা নির্বাচনের সময় সেই দিকটাও মাথায় রাখা হয়েছে।