জাহাজকর্মীদের শারীরিক পরীক্ষা চলছে। নিজস্ব চিত্র।
করোনাভাইরাস নিয়ে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। তার প্রভাব যাতে ব্যবসা-বাণিজ্যে না পড়ে, সে দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। বিশেষ করে বন্দরগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিদেশি ক্রুজ ভারতের কোনও বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পণ্যবাহী জাহাজের ক্ষেত্রে তেমন কোনও বাধা না থাকলেও, সতর্কতার কারণে কর্মীদের শারীরিক পরীক্ষার পরসেগুলো বন্দরে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে।
জাহাজ মন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই একটি ‘স্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) দেশের সমস্ত বন্দরে পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যদি কোনও ক্রুজ বা জাহাজকর্মী অথবা যাত্রীর করোনা আক্রান্ত কোনও দেশে যাওয়ার ইতিহাস থাকে, তা হলে ভারতের কোনও বন্দরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তাঁদের ঢোকার অনুমতি নেই। এ রাজ্যের তিনটি জল-বন্দর (কলকাতা, হলদিয়া, বজবজ)-এর ক্ষেত্রেও একই ‘এসওপি’ জারি হয়েছে। যদি কোনও বন্দরে ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’-এর বন্দোবন্ত করা যায়, তা হলে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে এ দিন কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেন, “বন্দরে ক্রুজ ঢোকার অনুমতি আপাতত নেই। পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে ঢোকার আগেই সাগরের কাছে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার জন্য মেডিক্যাল টিম তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকলে, ওই জাহাজকে বন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। জ্বর-সর্দি-কাশির মতো কোনও উপসর্গ ধরা পড়লে সরকারি নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”চিন বাদে সব দেশের সঙ্গেই জলপথে পণ্য পরিবহণ চালু রয়েছে ভারতের। তবে করোনাভাইরাস রুখতে বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-করোনা রুখতে সারা দেশে মডেল ভূমিকা কেরলের, বাংলা কী করছে?
সাংবাদিক সম্মেলনে কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার
কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে ৮০ জন চিকিৎসক এবংচিকিৎসাকর্মীকে তৈরি রাখা হচ্ছে। প্রতিটি জাহাজের কর্মীদের শারীরিক পরীক্ষার পরেইওই জাহাজকে বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেওযা হচ্ছে। আপাতত এই ‘এসওপি’ মেনেই নজরদারি চলবে। বিনীত আরও জানান, কলকাতা বন্দরের হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি রাখা হচ্ছে। রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই প্রতিটি পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-দিক বদলে মোকাবিলা যান-সমস্যার
কলকাতা বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত এ রাজ্যের তিনটি বন্দর এবং আন্দামান নিকোবরের পোর্ট ব্লেয়ারে মোট ৪৪১টি জাহাজের৮ হাজার ১৪৫ জন ক্রু সদস্যের শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। কারও ক্ষেত্রেই করোনভাইরাস ধরা পড়েনি। তাঁদের মধ্যে এক জনকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁর রিপোর্টেও নেগেটিভ এসেছে।