—প্রতীকী চিত্র।
বিরাটির শরৎ বসু রোডে একটি পাঁচতলা নির্মীয়মাণ বহুতলের পাঁচিল ধসে এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়েরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, ওই বহুতলটির নির্মাণকাজ চলার সময়ে ন্যূনতম সুরক্ষা-ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়নি। বহুতলটির চার দিক সবুজ কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখার ব্যবস্থা তো ছিলই না, এমনকি কাজ চলাকালীন একাধিক বার ইটের টুকরো, ধুলো, জল আশপাশের বাড়িতে এসে পড়ত বলেও তাঁদের অভিযোগ। বাসিন্দাদের আরও বক্তব্য, এই বিষয়গুলি নিয়ে একাধিক বার পুরসভায় জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনার পরে দেখা যাচ্ছে, শুধু উত্তর দমদম পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বহুতলেই নয়, পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাধিক নির্মীয়মাণ বহুতলের ক্ষেত্রেও উঠছে একই অভিযোগ।
এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, কোনও বহুতল তৈরি হওয়ার সময়ে সেটির চার পাশ ঘিরে কাজ করার রেওয়াজ কার্যত দেখাই যায় না উত্তর দমদমে। তাঁদের প্রশ্ন, বিরাটির ঘটনার পরে কি নড়ে বসবে পুর প্রশাসন? উত্তর দমদম পুরসভা অবশ্য জানিয়েছে যে, নির্মাণের কাজ চলাকালীন নির্মাণস্থল ঘিরে রাখতে হবে। এর অন্যথা হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। এই বিষয়ে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। স্থানীয় থানাকেও সব জানিয়ে রাখা হচ্ছে। যদিও পুরসভার এমন অবস্থানে আদৌ কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন বাসিন্দারা।
বিরাটির শরৎ বসু রোডে গত ৩০ মার্চ একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পাঁচিল ধসে মৃত্যু হয় স্থানীয় বাসিন্দা কেয়া শর্মাচৌধুরীর। ঘটনার পরে সামনে আসতে থাকে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ। স্থানীয়েরা জানান, ওই বহুতলে কাজ চলাকালীন মাঝেমধ্যেই আশপাশের বাড়িতে এসে পড়ত ইটের টুকরো। তা নিয়ে নির্মাণকারীদের একাধিক বার সতর্ক করা হলেও তাঁরা কান দেননি। বাসিন্দারা এ-ও বলছেন, এই পুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যে সব বহুতল তৈরি হচ্ছে, সেগুলির বেশ কয়েকটির ক্ষেত্রেও উঠে এসেছে এমন সমস্যা। অভিযোগ, ভোরে বড় বড় ট্রাক এবং লরি থেকে ইমারতি সামগ্রী নামানোর কাজ হয়। তাতে এক দিকে যেমন প্রবল শব্দ হয়, অন্য দিকে ধুলোয় ঢাকে চার পাশ। তাই বাসিন্দাদের দাবি, শুধুমাত্র নির্মাণস্থল ঘিরে রাখলেই হবে না। নির্মাণ সংস্থাগুলি যাতে পরিবেশবিধি মেনে চলে, সেই দিকটিও নিশ্চিত করতে হবে পুর প্রশাসনকে।
পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস জানান, এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কোনও বহুতল তৈরির সময়ে ন্যূনতম নিয়মকানুন সংশ্লিষ্ট সংস্থা মানছে কি না, তা দেখতে পুরসভা নজরদারি চালাবে। পুলিশকেও এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা হচ্ছে।