—ফাইল চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে ফুলের চাষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সে আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল ফুলচাষিদের। এবং দেখা গেল, তাঁদের ভয়টা অমূলক নয়। ঝড় এবং মুষলধারে বৃষ্টির জেরে এ রাজ্যে ফুল চাষের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার জেরে আগামী মাস দুয়েক কলকাতার ফুলবাজার-সহ বেশ কিছু এলাকায় ফুলের জোগানে রীতিমতো টান পড়তে চলেছে। তাই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে ‘দুয়ারে ত্রাণ’-এর মাধ্যমে সাহায্য পাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ফুলচাষিরাও।
তাঁরা জানিয়েছেন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলায়, সেখানে সব চেয়ে বেশি ফুলের চাষ হয়ে থাকে, সেখানে ইয়াস এবং বৃষ্টির প্রভাবে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই চাষ। মূলত টানা বৃষ্টিতে জল জমে প্রায় নষ্ট হতে বসেছে নরম প্রকৃতির ফুলের ফলন। অন্য ফুলের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ কুঁড়িই ঝরে গিয়েছে। তাই ফের নতুন করে ফুলচাষে হাত দিতে গেলে সরকারি সাহায্যের একান্ত ভাবে প্রয়োজন বলেই জানাচ্ছেন ফুলচাষিদের একাংশ।
মল্লিকঘাটের কয়েক জন ফুলচাষি জানাচ্ছেন, গত বছর লকডাউন ও আমপানের জেরে প্রায় সর্বস্বান্ত হতে বসেছিলেন তাঁরা। সংক্রমণে রাশ টানতে চলতি বছরে সরকারি কড়াকড়ির জেরে ফের সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে এ বার দিশাহারা অবস্থা তাঁদের। ঘূর্ণিঝড় ও অতিবৃষ্টিতে ফুলের বাগানগুলি একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ছোট ফুলচাষিরা উপযুক্ত সরকারি সাহায্য না-পেলে পরবর্তী চাষে হাতই দিতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন ফুলচাষিদের একাংশ।
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক জানিয়েছেন, গত ২৭ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা এক আবেদনপত্রে ফুলচাষিদের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘দুয়ারে ত্রাণ’-এর যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে ফুলচাষিদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই। নারায়ণবাবু বলেন, “ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ফুলচাষিদের যদি দুয়ারে ত্রাণের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তা হলে তাঁরা খুবই উপকৃত হবেন। দুয়ারে ত্রাণের মাধ্যমে ফুলচাষিদের সাহায্য করার আবেদন জানিয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি আমরা।”