আরজি কর হাসপাতালে ‘গণইস্তফা’ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। — প্রতীকী চিত্র।
এ বার ‘গণইস্তফা’ দিলেন এসএসকেএমের ৪০ জন সিনিয়র ডাক্তার। ধর্মতলায় শনিবার রাত থেকে আমরণ অনশন করছেন ছয় জুনিয়র ডাক্তার। রবিবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আরজি কর হাসপাতালের আর এক জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। ১০ দফা দাবিতে অনশন করছেন তাঁরা। এই আবহে রাজ্যে একের পর এক সরকারি হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরা ‘গণইস্তফা’-র পথে হাঁটছেন।
বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের ৪০ জন সিনিয়র ডাক্তার ‘গণইস্তফা পত্র’-এ সই করেছেন। সেখানে তাঁরা দাবি করেছেন, অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেটাতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে প্রশাসন। সে কারণে এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা।
বুধবার ‘গণইস্তফা পত্র’-এ সই করেছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ৩৪ জন সিনিয়র ডাক্তার। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের তরফে সরকারকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ না করলে সেখানকার সিনিয়র ডাক্তারেরাও ‘গণইস্তফা’ দেবেন বলে জানিয়েছেন। একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ডাক দেন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারেরাও।
মঙ্গলবার ‘গণইস্তফা’র হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার সেখানকার ৭৫ জন সিনিয়র ডাক্তার ইস্তফাপত্রে সই করেছেন। তার আগে মঙ্গলবারই আরজি কর হাসপাতালের ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার ‘গণইস্তফা’ দিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ে কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলাগুলিতেও। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বুধবার অন্তত ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন। তালিকাটি ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে।
সিনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, সরকারের তরফে ‘সদর্থক’ ভূমিকা দেখা না যাওয়ার কারণেই ‘গণইস্তফা’ দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, জুনিয়র ডাক্তারদের ন্যায্য দাবি মেনে নিক সরকার। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে কি সরকারি চাকরিতে ‘গণইস্তফা’ দিতে পারেন সিনিয়র ডাক্তারেরা? রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন সিনিয়র চিকিৎসকদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, এমন ভাবে সরকারি চাকরিতে ‘গণইস্তফা’ হয় না। স্বাস্থ্য দফতরের মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসে চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ারও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ‘গণইস্তফা’ দেওয়া মানে, কখনওই সেই মুহূর্ত বা পরের দিন থেকে ওই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক আর কাজ করবেন না, সেটাও বলতে পারেন না।