আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। —ফাইল চিত্র।
কয়েক দিনের ‘নীরবতা’র পর আবার ‘সক্রিয়তা’। আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা চূড়ান্ত করতে গণকনভেনশনের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার দুপুর ৩টের সময় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে অনুষ্ঠিত হতে চলা ওই কনভেনশনে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মঞ্চে থাকতে পারেন আরজি করের নির্যাতিতার মা-বাবাও। অন্য দিকে, ওই আবহে আবার পাল্টা একটি সংগঠনের সূচনা করেছে জুনিয়র ডাক্তারদের অন্য একটি অংশ। শুক্রবার বেশি রাতে গঠিত হওয়া সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ অ্যাসোসিয়েশন’।
গত সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের পর ধর্মতলার অনশনমঞ্চে ফিরে আসেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনার পর ১৭ দিনের অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, রাজ্য সরকার বা প্রশাসনের কথায় নয়, নির্যাতিতার মা-বাবার অনুরোধে এবং রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে ‘আমরণ অনশন’ এখানেই শেষ হচ্ছে। তবে আন্দোলন থামবে না। সে দিনই জানিয়ে দেওয়া হয় শনিবারের গণকনভেনশনের কথা। আরজি কর মেডিক্যালে আয়োজিত ওই মঞ্চ থেকেই আন্দোলনকারী জুনিয়র জাক্তারেরা তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি কনভেনশনে যাঁদের আমন্ত্রণ করা হচ্ছে, তাঁদের কোনও পরামর্শ বা মতামত থাকলে তা শুনবেন আন্দোলনকারীরা। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। জানা যাচ্ছে, মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্রকে গণকনভেনশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ডাকা হয়েছে শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়, তথ্য বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, শিক্ষাবিদ সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ ছাড়াও বেশ কয়েক জন প্রাক্তন পুলিশকর্তা এবং আইনজীবীকে মঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা হয়ছে বলে আন্দোলনকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। গণকনভেনশনে বক্তব্য পেশ করতে পারেন আন্দোলনকারীদের মধ্যের ‘চেনা মুখেরা’। থাকছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ। নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের ‘ব্যাকরণগত ও আইনি’ ভুল ধরে চর্চায় আসেন তিনি।
অন্য দিকে, জুনিয়র ডাক্তারদের আর একটি অংশ যে নতুন সংগঠন তৈরি করেছে, তাতে দু’জনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন চিকিৎসক শ্রীশ চক্রবর্তী এবং প্রণয় মাইতি। সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্দোলনের নামে জুনিয়র ডাক্তারদের একটি অংশ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ‘অরাজকতা’ তৈরি করতে চাইছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পাল্টা সংগঠন গড়ে ‘সত্যি’টা মানুষের কাছে তুলে ধরাই ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ অ্যাসোসিয়েশন’-এর লক্ষ্য বলে জানাচ্ছেন সদস্যেরা।