Kolkata Karcha

কেবিন আর মেসে বিপ্লব-চিহ্ন

সে সময় এই গলিতেই মিনার্ভা থিয়েটারের অভিনেতা কুমার মিত্তিরের বাড়ির রকে একটা আড্ডা বসত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৭
Share:

Favourite Cabin2 Sourced by the ABP

১৯৪২ সাল। অগস্ট আন্দোলনে কেঁপে উঠল এ দেশের ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা। অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠি ও গুলি চালাল। কিন্তু ফল হল উল্টো। দ্বিগুণ জনরোষে পুড়তে লাগল সরকারি সম্পত্তি। নেতাদের গ্রেফতার বা স্কুল-কলেজ বন্ধ করেও লাভ হল না। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল নানা প্রান্তে। খবর প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি হল। তবু মানুষ খবর পেতে থাকলেন নানা ভাবে। যেমন, বাগবাজারের আনন্দ চ্যাটার্জি লেনের দেওয়ালে কারা যেন রাতের বেলা সাইক্লোস্টাইল করা খবরের কাগজ সেঁটে যেত। ভোরেই মানুষ পড়ে ফেলতেন যশোরে ঘটে যাওয়া পুলিশি অত্যাচার অথবা মেদিনীপুরে গণপ্রতিরোধের খবর।

Advertisement

সে সময় এই গলিতেই মিনার্ভা থিয়েটারের অভিনেতা কুমার মিত্তিরের বাড়ির রকে একটা আড্ডা বসত। খেউড় আর মজার গল্পের লোভে ছেলে-ছোকরাদের ভিড় লেগেই থাকত সেখানে। ভদ্রলোকরা চেষ্টা করতেন জায়গাটা এড়িয়ে চলতে। কিছু দিন হল সেই আড্ডায় এক নতুন ছোকরা এসে জুটল। জানা গেল, সে এসেছে হাজারীবাগ থেকে। মজার গল্প বলে সবার সঙ্গে মিশে গেল সে। এক দিন আড্ডায় জ্বালাময়ী রাজনৈতিক বক্তৃতাও করল। আর তার পরের দিনই গলিতে পুলিশের হানা! ছেলেটি কিন্তু তার আগেই উধাও। পরে জানা গেল যে সে এক বিপ্লবী। কুমার মিত্তিরের রকে বখাটে ছোকরাদের আড্ডায় পুলিশের নজর পড়বে না, এ ভেবেই সেখানে আত্মগোপন করে ছিল সে; রাতে গলির মুখে সে-ই সাঁটত খবরের কাগজ। কুমার মিত্তির স্বীকার করেছিলেন, এ ছোকরা তার থেকেও বড় অভিনেতা! সকলে জানতে পারল, সেই ছেলেটির নাম রামমনোহর লোহিয়া!

গত শতকের প্রথমার্ধে কলকাতায় গড়ে ওঠা কেবিন-রেস্তরাঁগুলির আড্ডা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মিলনকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। তেমনই একটি আড্ডা ছিল শ্যামবাজার ট্রাম ডিপো থেকে কয়েক পা দূরেই জয়শ্রী কেবিনে। বিখ্যাত এক বেসরকারি সংস্থার মালিকানাধীন এই জায়গাটি থেকে বিনামূল্যে চা খাওয়ানো হত তাদের চা-ব্যবসার প্রসারে। ক্রমে এই আড্ডার চরিত্র বদলে গেল, সেটি পরিণত হল স্বদেশি ছাত্রদের তর্ক-বিতর্কের কেন্দ্রে। এই আড্ডার অনেকে পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে কারাবাসও করেছিলেন। ব্রিটিশ পুলিশের নজর পড়েই আড্ডার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হয় বলে লিখেছেন চণ্ডী লাহিড়ী। কলেজ স্ট্রিট পাড়ার ফেভারিট কেবিনেও আনাগোনা ছিল বিপ্লবীদের। সুভাষচন্দ্র থেকে নজরুলও এসেছেন এখানে, বাঙালির জানা।

Advertisement

উত্তর ও মধ্য কলকাতায় ছড়ানো নানা মেসবাড়ি ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গোপন ঠিকানা। গোপীমোহন দত্ত লেনের মেসবাড়ি ছিল আলিপুর বোমা মামলায় জড়িত বিপ্লবীদের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র, নিরাপদ রায় ও কানাইলাল দত্তকে এখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়। স্কট লেনে একটি মেসে থাকতেন অরবিন্দ ও বারীন ঘোষ, তাঁদের বিপ্লবী সাথীরাও। কলেজ স্ট্রিটের এক মেসে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাঘা যতীনের। স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবীদের স্মৃতিচিহ্নগুলি এ ভাবেই ছড়িয়ে রয়েছে এই শহরের নানা অলিগলিতে, আড়ালে। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এই ইতিহাসের সংরক্ষণে কলকাতার এগিয়ে আসা দরকার অবিলম্বে। ছবিতে ফেভারিট কেবিন, ২০০৭ সালে।

ভাষাচার্য

ইংল্যান্ডে এক সম্মেলনে এক অধ্যাপকের মন্তব্য: যাস্ক, পাণিনির ভারতে আজ‌ সুনীতিকুমার আছেন, তবু সে দেশের ছেলেমেয়েরা ভাষাতত্ত্ব শিখতে কেন বিদেশে আসে তা তিনি বুঝতে পারেন না।— সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (ছবি) প্রসঙ্গে লিখেছেন সুকুমারী ভট্টাচার্য। সুনীতিকুমারকে অমর করে দিয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ, সেই যে শেষের কবিতা-য় অমিত “পড়তে লাগল সুনীতি চাটুজ্জের বাংলা ভাষার শব্দতত্ত্ব, লেখকের সঙ্গে মতান্তর ঘটবে এই একান্ত আশা নিয়ে।” রবীন্দ্রনাথ তাঁকে দেন ‘ভাষাচার্য’ স্বীকৃতি, প্রস্তাব করেছিলেন ‘লিপিবাচস্পতি’ বা ‘লিপিসার্বভৌম’ উপাধিও। কলকাতা সোসাইটি ফর এশিয়ান স্টাডিজ় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে দ্বাদশ ‘সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা’ ৩০ অগস্ট দুপুর ৩টেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হল-এ। ‘ট্রান্সলেশন, এম্পায়ার অ্যান্ড কলোনিয়াল নলেজ-প্রোডাকশন’ বিষয়ে বলবেন অধ্যাপিকা সুপ্রিয়া চৌধুরী।

ভাদ্রোৎসব

১৮৭৮-এর ১৫ মে টাউন হলে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের জন্ম। সভাপতি আনন্দমোহন বসুর উপরে তরুণ ব্রাহ্মদল অর্পণ করেছিল এর সংবিধান রচনার দায়িত্ব। তারুণ্যের সঙ্গে প্রয়োজন অভিজ্ঞতারও, তাই প্রবীণ ব্রাহ্ম শিবচন্দ্র দেবের কাঁধে ন্যস্ত হয়েছিল সম্পাদকের ভার। শুধু ব্রাহ্ম আন্দোলনেই নয়, উনিশ শতক এবং বিশ শতকের খানিকটা জুড়েও বঙ্গীয় নবজাগৃতিতে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা ছিল এই নবীন-প্রবীণ বন্ধনের। সে কথা মনে রেখে, ১৯৬তম ভাদ্রোৎসব উপলক্ষে ২১১ বিধান সরণির সাধারণ ব্রাহ্মসমাজে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আনন্দমোহন বসু ও শিবচন্দ্র দেব স্মরণ। বলবেন অভ্র ঘোষ ও অভিষেক ঘোষাল; সভামুখ্য অমিত দাস।

সুরে সুরে

স্ট্রিং অর্কেস্ট্রার বিশ্বেও আছে কলকাতার সুরেলা উপস্থিতি। তার প্রমাণ ‘কলকাতা ইয়ুথ অঁসম্বল’। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়েরও সাগ্রহ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে অমিতাভ ঘোষ পরিচালিত এই স্ট্রিং অর্কেস্ট্রা, আর গত আট বছর ধরে শহরে করে চলেছে বিষয়ভিত্তিক নানা পরিবেশনা। নবম বছরের অনুষ্ঠান ‘আ বেনে প্লাসিতো ২০২৪’-এ এই স্ট্রিং অর্কেস্ট্রার বিষয়ভাবনা ‘সাউন্ড অব হিলিং’, মধুসূদন মঞ্চে আগামী ২৬ অগস্ট সোমবার বিকেল ৫টা থেকে। মঞ্চে থাকবেন একশো ত্রিশ জন ভায়োলিনিস্ট ও অন্যান্য ধ্রুপদী বাদ্যযন্ত্র-শিল্পীরা; শহরের গুণী সঙ্গীতব্যক্তিত্বরাও। অনুষ্ঠানের দু’টি পর্বের দুই মঞ্চ নিবেদিত কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-সুচিত্রা মিত্র এবং উস্তাদ রাশিদ খান-পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণে, শ্রদ্ধায়।

সুতানুটি-কথা

কলকাতার গভীরে ছড়িয়ে যে সংস্কৃতির শিকড়, নতুন প্রজন্মকে তা চিনিয়ে দিতে কাজ করে চলেছে সুতানুটি পরিষদ, গত তিন দশকেরও বেশি। তার একটি দিক যদি সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্থাপত্যের সংরক্ষণ, অন্যটি তবে নানা আনন্দ-আয়োজন, যেমন ‘সুতানুটি উৎসব’। ৩২তম উৎসব আজ ও আগামী কাল, ২৪-২৫ অগস্ট ঐতিহ্যবাহী শোভাবাজার নাটমন্দিরে। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে শুরু, সুতানুটি সম্মানে ভূষিত হবেন প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায় এবং রামমোহন লাইব্রেরি। ‘শতবর্ষে সুচিত্রা-কণিকা’ স্মরণে গান গাইবেন প্রিয়ম মুখোপাধ্যায় ও ঋতপা ভট্টাচার্য, পরে পাঠে-গানে জয় গোস্বামী ও রাহুল মিত্রের নিবেদন। বাঙালির তার্কিক মন বাংলার উন্নতির অন্তরায় কি না, বিতর্ক জমবে রবিবার।

নব নবান্ন

গ্রামের কৃষক পরিবার দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধার কারণে, বেঁচে থাকার মরিয়া চেষ্টায় এসে পৌঁছয় কলকাতা। শুরু হয় আর এক লড়াই। কালোবাজারি, নারীপাচার, ভিক্ষাবৃত্তিতে ছারখার হতে থাকে। তবুও শেষ হয়ে যায় না। তেতাল্লিশের মন্বন্তরের প্রেক্ষাপটে তৈরি এ নাটকে যেমন মৃত্যুর ভয়াবহ বাস্তবতা, তেমনই আছে প্রতিবাদের ভাষা, প্রতিরোধের চিহ্নও। ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের উদ্যোগে বিজন ভট্টাচার্যের নবান্ন নাটকটি প্রথম অভিনীত হয় ১৯৪৪-এর ২৪ অক্টোবর শ্রীরঙ্গমে। এ বার নান্দীকার নাট্যগোষ্ঠী আর কলকাতা পার্টিশান মিউজ়িয়ম ট্রাস্ট-এর যৌথ প্রচেষ্টায় মঞ্চস্থ হবে নবান্ন-র নবতম প্রযোজনা, আগামী ৩০ অগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়, অ্যাকাডেমি মঞ্চে। নির্দেশনায় সোহিনী সেনগুপ্ত ও অর্ঘ্য দে সরকার। সোহিনীর মতে, “প্রতিবাদের দিক থেকে এ নাটক আজও চিরসত্য।”

রবীন্দ্র গ্যালারি

সাড়ে ন’বছর পর স্বমহিমায় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর রবীন্দ্র গ্যালারি (ছবি), বাইশে শ্রাবণে খুলে গেল। এখানে আছে রবীন্দ্রনাথের আঁকা অনেকগুলি ছবি, ওঁর ব্যবহারের সামগ্রী, চিঠিপত্র, ডায়েরি, পুস্তিকা। আছে বাংলার বরেণ্য শিল্পীদের আঁকা রবীন্দ্র-প্রতিকৃতিও: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর নন্দলাল বসু অসিতকুমার হালদার বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় সুধীর খাস্তগীর রামকিঙ্কর বেজ গোপাল ঘোষ নীরদ মজুমদার থেকে এম এফ হুসেন ও সত্যজিৎ রায়, সকলের কাজ। প্রদর্শগুলির অনেকাংশই লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়ের সংগ্রহের। ২০১৬-তে অ্যাকাডেমি-সংগ্রহের প্রায় দু’শোটি ছবি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অর্থানুকূল্যে ‘রেস্টোরেশন’-এর জন্য পাঠানো হয় লখনউয়ের ন্যাশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ফর কনজ়ার্ভেশন-এ, তারই বাছাই কতকগুলি দেখা যাচ্ছে এখন। উদ্বোধনে ছিলেন শিল্পী যোগেন চৌধুরী-সহ বিশিষ্টজন; খোলা থাকবে সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে রবিবার, বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

চিত্রে লেখা

আরও একটি শিল্পচর্চার পরিসর পেল কলকাতা, ‘চিত্রলেখা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’। ঠিকানাটি চেনা, দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাস। শিল্পী সনৎ করের পরিবার ও দেবভাষা-র একত্র এই উদ্যোগ শিল্পকলা ও লেখালিখি ঘিরে: বঙ্গীয় ও ভারতীয় আধুনিক শিল্পীদের কাজ, লেখকদের পাণ্ডুলিপি, বই এক ছাদের তলায় থাকবে এখানে। নামটি নেওয়া রবীন্দ্রনাথের ‘অয়ি চিত্রলেখা দেবী...’ থেকে। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির এক ‘লিটল মিউজ়িয়ম’ গড়ার: নিয়মিত প্রদর্শনী হবে, পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ, ডিজিটাইজ়েশনও। প্রথম প্রকল্প ‘সনৎ কর আর্কাইভ’ প্রস্তুত, ওঁরা আয়োজন করবেন সনৎ কর সম্মাননা ও স্মারক বক্তৃতা, পরে মণীন্দ্র-দেবারতি স্মারক বক্তৃতা, তুষার চৌধুরী স্মারক বক্তৃতাও। আজ, ২৪ অগস্ট সন্ধ্যায় পথ চলা শুরু; রয়েছে গ্রন্থপ্রকাশ, সম্মাননা ও দু’টি প্রদর্শনী: ‘নতুনের কলস্বর’ ও অতুল বসুর কাজ নিয়ে ‘পারসিসটেন্স অব টাইম’। সঙ্গের ছবিতে সনৎ করের চিত্রকৃতি।

ফিরে পাওয়া

এক-এক জন মানুষের জীবনব্রত হয়ে ওঠে আমাদের শিকড় বাংলা ভাষাকে ভুলতে না দেওয়া। চার দশক আগে শোভা ঘোষ সে কাজই করেছিলেন তাঁর আশি বছর বয়সে, যেন ভুলে না যাই বইয়ে। পাতায় পাতায় পূর্ব বাংলার নানা অঞ্চলের ভাষা-সঞ্চয়: ঢাকা ও বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার ভার নিয়েছিলেন নিজে, সিলেট ও চট্টগ্রামের ভাষা লিখিয়েছিলেন দুই বান্ধবীকে দিয়ে। পাতার বাঁ দিকে মুদ্রিত পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক ভাষা, ডানে প্রমিত বাংলা। বরিশাল সেবা সমিতি ১৯৮৩ সালে প্রকাশ করেছিল বইটি, যশোধরা রায়চৌধুরীর সম্পাদনায় ফের এখনকার পাঠককে পড়ার সুযোগ করে দিল যুক্তাক্ষর প্রকাশনী। গুণিজন-উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল গত ১৯ অগস্ট বিকেলে, ত্রিপুরা হিতসাধিনী সভাগৃহে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement