ফাইল চিত্র।
মেধা তালিকায় নাম থাকবে বলে আশা করেছিল ওরা। কেউ আবার ভেবেছিল, সব বিষয়েই প্রাপ্ত নম্বর থাকবে নব্বই শতাংশ। বুধবার সকালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ফলাফল ঘোষণা করতেই দমদম ও বালির বাসিন্দা ওই পড়ুয়ারা দেখল, তাদের নাম রয়েছে মেধা তালিকার এক থেকে দশের মধ্যে!
ছেলে অয়ন ভাল ফল করবে বলেই আশা ছিল দমদমের ইটলগাছার বাসিন্দা অজয় ঘোষের। তাই মঙ্গলবার রাতে হাল্কা ভাবেই ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘কাল তো রেজাল্ট। কত পাবি মনে হচ্ছে?’ সাত-পাঁচ না ভেবেই অয়ন জানিয়েছিল, খুব কম হলেও ৬৮৫ নম্বর পাবেই সে। বুধবার পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় যখন মেধা তালিকা ঘোষণা করলেন, তখন দেখা গেল, অয়নের ধারণাই মিলে গিয়েছে। ৬৮৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে দমদম বৈদ্যনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্র। রেজাল্ট জানার পরে অয়ন বলছে, ‘‘যে রকম ভাবে খেটেছিলাম, তাতে আরও একটু ভাল ফল হতে পারত। অঙ্কে ১০০ পাব ভেবেছিলাম, পেয়েছি ৯৯। ইংরেজিতেও ৯৫ পেয়েছি। এ রকম ভাবে এক-দুই নম্বর করে মোট কিছুটা নম্বর কমে গিয়েছে।’’
যেমন, বাংলায় প্রাপ্ত নম্বর আরও একটু বেশি হলে দশম থেকে আরও উপরে নামটা থাকত বলেই মনে করছে বালির শান্তিরাম রাস্তার বাসিন্দা মেঘা মণ্ডল। উত্তরপাড়া মডেল স্কুলের ওই ছাত্রী বাংলায় পেয়েছে ৯৩। তার কথায়, ‘‘পদার্থবিদ্যায় ১০০ হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু দু’নম্বর কমে গিয়েছে। তবে অঙ্কে ১০০-ই পেয়েছি।’’ মেধা তালিকায় নাম থাকার কথা ভাবেনি বালির সাঁপুইপাড়ার সাগ্নিক মণ্ডল। যদিও ভেবেছিল, সব বিষয়েই সে ৯০ শতাংশ পাবে। কিন্তু মেধা তালিকা প্রকাশ হতেই সাগ্নিক দেখল, ৬৮৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম হয়েছে সে। তিন পড়ুয়াই জানাচ্ছে, মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে তাঁদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না। কোনও গৃহশিক্ষক ছিলেন না অয়নের। বাবার কাছে পড়ার পাশাপাশি স্কুলের
শিক্ষকদের সহযোগিতাতেই এমন ফল সম্ভব হয়েছে বলেই দাবি করছে অয়নের পরিবার। সাগ্নিক ও মেঘার অবশ্য গৃহশিক্ষক ছিলেন। দু’জনেই তাদের ভাল ফলের কৃতিত্ব দিতে চায় বাবা-মা, স্কুলশিক্ষক ও গৃহশিক্ষকদের।
পড়ার অবসরে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই পড়তেই বেশি ভালবাসে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখা সাগ্নিক। আবার ছোট থেকেই মহাকাশের রহস্য জানার প্রবল কৌতূহল বালির অন্য কৃতী মেঘার। ভবিষ্যতে ইসরোয় গিয়ে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করতে চায় সে।
জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় একই নম্বর পেল বেহালার যমজ দু’ভাই। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই দু’জনে একই নম্বর পায়। মাধ্যমিকেও রূপক ও দীপক দাস পেয়েছে ৬৪৯। তাদের কথায়, ‘‘একই নম্বর পেয়ে খুব আনন্দ হচ্ছে। কেউ কারও থেকে একটু কম পেলে হয়তো মন খারাপ হত। আমরা দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |