প্রতীকী ছবি।
শীত পড়তেই শহরের স্কুলগুলিতে ফিরে এসেছে ‘স্পোর্টস ডে’। করোনার জন্য গত দু’বছর বন্ধ ছিল এই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। তা আবার ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত অধিকাংশ পড়ুয়া। বেশির ভাগ স্কুল জানাচ্ছে, চলতি মাসে ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে তাদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। কিছু স্কুলে তা হবে জানুয়ারি মাসে। তবে বেশ কিছু স্কুল জানাচ্ছে, দু’বছর পরে খেলাধুলো শুরু হওয়ায় অনেক পড়ুয়ার মধ্যে শারীরিক সক্ষমতার অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। স্পোর্টস ডে-র আগে অনুশীলনের সময়ে তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছে। অনেকে আবার মোবাইলের আসক্তি কাটিয়ে খেলার মাঠে ফিরতে দ্বিধাগ্রস্ত।
যেমন, শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানালেন, তাঁদের স্কুলের জুনিয়র বিভাগের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়ে গিয়েছে। সিনিয়র বিভাগের প্রতিযোগিতা আগামী শনিবার। ব্রততী বলেন, ‘‘বিভিন্ন খেলায় পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করেছে ঠিকই। কিন্তু অনেকেই শারীরিকভাবে ততটা সক্ষম নেই। গত দু’বছর ওরা বাড়িতে বসে থাকায় মাঠে প্রায় নামেনি বললেই চলে। ফলে, দ্রুত হাঁফিয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, এক শ্রেণির পড়ুয়ার মধ্যে মোবাইল-আসক্তি গড়ে ওঠায় তারাও কমিয়ে দিয়েছে খেলাধুলো।
দক্ষিণ কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এক শিক্ষক জানালেন, তাঁদের স্কুলে আগামী শনিবার ‘স্পোর্টস ডে’। কিন্তু অনুশীলনের সময়ে দেখা যাচ্ছে, কিছু পড়ুয়া অসুস্থ বোধ করায় খেলায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। যা আগে কখনও হয়নি। ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহাও বলেন, “স্পোর্টস ডে নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে উৎসাহ থাকলেও কারও কারও ক্ষেত্রে ফিটনেসের অভাবও দেখা যাচ্ছে।’’
মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী করের মতে, মোবাইলে আসক্তি কাটিয়ে ছেলেমেয়েদের খেলার মাঠে ফেরাতে অত্যন্ত জরুরি ছিল স্পোর্টস ডে-র ফিরে আসা। তিনি বলেন, “আমাদের জুনিয়র ও সিনিয়র, দু’টি বিভাগেরই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়ে গিয়েছে। সবাই খুব উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিয়েছে। কিন্তু, কারও কারও মধ্যে ফিটনেসের অভাবও দেখেছি।’’ দেবী জানান, সম্প্রতি তাঁদের স্কুলে পড়ুয়াদের চক্ষু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীদের মধ্যে ৩০ শতাংশের ক্ষেত্রে চোখে পাওয়ার এসেছে। তাঁর মতে, দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল দেখার জন্য এমন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শহরের এক ফিটনেস বিশেষজ্ঞ বাবলু সাহা বলেন, “স্কুলপড়ুয়াদের এখন দরকার দৌড়, সাঁতার, স্কিপিংয়ের মতো কার্ডিয়ো-রেসপিরেটরি ব্যায়াম। সেই সঙ্গে জরুরি পেশির শক্তি বাড়ানোর ব্যায়ামও। এর পাশাপাশি দরকার সুষম খাওয়াদাওয়া। তা হলেই তারা আবার শারীরিক সক্ষমতাফিরে পাবে।’’