প্রতীকী চিত্র।
গার্ডেনরিচ গণধর্ষণ-কাণ্ডে এক অভিযুক্তের গ্রেফতারির ২৪ ঘণ্টা পরেও নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত খবর, গণধর্ষণের ধারা যুক্ত রেখেই তদন্ত চালাচ্ছে লালবাজার। এই ঘটনায় একমাত্র ধৃত আসগর শাহকে এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডে বছর ছাব্বিশের এক তরুণীর ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁকে গণধর্ষণের পরে সেই বাড়ি থেকে ১৫ লক্ষ টাকা লুটের অভিযোগ সামনে আসে বুধবার। মামলার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত কিনারা করতে সাত সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করে লালবাজার। বৃহস্পতিবার দুপুরে মূল অভিযুক্ত সন্দেহে বছর ছাব্বিশের আসগরকে গার্ডেনরিচের বাতিকল লেন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, অভিযোগকারী তরুণীর সঙ্গে গত আড়াই বছর
ধরে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তার। কিন্তু তরুণীর পরিবার থেকে সেই সম্পর্ক মেনে নেওয়া হয়নি। আসগরের সঙ্গে যাতে যোগাযোগ না রাখতে পারেন, তার জন্য তরুণীকে তালাবন্ধ অবস্থায় রেখে পারিবারিক ব্যবসার কাজে যেতেন তাঁর বাবা-মা ও ভাই। গত মঙ্গলবার এমনই তালাবন্ধ থাকাকালীন আসগর তরুণীর ফ্ল্যাটে ঢুকে হাত-পা বেঁধে তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। আসগরের সঙ্গে এই ঘটনায় আরও তিন জন যুক্ত ছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তরুণী।
এ দিন আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল জানান, লুট হওয়া ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ১১ লক্ষ টাকা পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে। এর পাশাপাশি, ধৃতের কাছ থেকে কাটার, ছেনি, হাতুড়িও উদ্ধার হয়েছে। সৌরীনবাবু বলেন, ‘‘ওই কাটার, ছেনি, হাতুড়ি ব্যবহার করেই আসগর আলমারি কেটে টাকা-গয়না লুট করেছিল। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে এবং এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত, তা বার করতে ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। বিচারকের কাছে সেই আবেদনই রাখা হয়েছে।’’ ধৃত আসগরের আইনজীবী এ দিন জামিনের আবেদন জানালেও তা গ্রাহ্য হয়নি।
এই ঘটনার পরে অনেকটা সময় কেটে গেলেও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এ দিনও স্পষ্ট হয়নি। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তের সঙ্গে তরুণীর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। তা হলে প্রথম প্রশ্ন, ওই যুবককে ফ্ল্যাটে ঢুকতে কি তরুণীই সাহায্য করেছিলেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত, সেটাই বা কেন এখনও সামনে এল না? তৃতীয় প্রশ্ন, ঘটনা ঘটার পরে অভিযুক্ত বা অভিযুক্তেরা বেরিয়ে গেলে তরুণী প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছিলেন কি? চতুর্থ প্রশ্ন, গণধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও প্রতিবেশীরা কিছুই টের পেলেন না কী ভাবে?