Kolkata Metro

সতর্কবার্তাই মানছে মেট্রোয় বিনা টিকিটের ফাঁদের অস্তিত্ব

সাধারণ রেলে টিকিট না কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও বিরল নয়। সেখানে বিনা টিকিটের যাত্রীদের থেকে আদায় করা জরিমানার অঙ্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে দেখে বোঝা যায়, এমন রেলযাত্রীর কমতি নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৬
Share:

বিনা টিকিটের যাত্রীদের দেখা মিলছে মেট্রোতেও। ফাইল চিত্র।

নজরদারির কড়াকড়িতে নাকি মাছি গলার উপায় নেই! তা হলে কী ভাবে চোখ এড়িয়ে ঢুকে পড়া সম্ভব হচ্ছে? টোকেন বা স্মার্ট কার্ড ছাড়া মেট্রোর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত পৌঁছনোর যেখানে পথ নেই, সেখানেও কি বিনা টিকিটের যাত্রীদের অহরহ দেখা মেলে? মেট্রোর নতুন এসি রেকে কামরারমনিটরের পর্দায় ভেসে ওঠা লেখা বা ঘোষণা শুনলে তেমন আশঙ্কাই দৃঢ় হয়।

Advertisement

সাধারণ রেলে টিকিট না কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও বিরল নয়। সেখানে বিনা টিকিটের যাত্রীদের থেকে আদায় করা জরিমানার অঙ্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে দেখে বোঝা যায়, এমন রেলযাত্রীর কমতি নেই। তাই বলে মেট্রোতেও? যেখানে স্মার্ট কার্ড বা টোকেন ব্যবহার করে স্মার্ট গেট পেরোনো ছাড়া প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করাই অসম্ভব?

মেট্রোর দাবি, টোকেন বা স্মার্ট কার্ডের কোনওটিই নেই, এমন যাত্রী বিরল। বরং যাত্রাপথের যথাযথ মূল্যের থেকে কম দামের টোকেন ব্যবহার করে সফরের উদাহরণ অসংখ্য পাওয়া যায়। অল্প দূরত্বের টোকেন কেটে তা দিয়ে বেশি দূরত্ব সফর করার প্রবণতা যাত্রীদের একাংশের মধ্যে আছে বলে মানছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে ধরা পড়ে জরিমানা দিতে হয় তাঁদের অনেককে। আড়াইশো টাকা জরিমানা ছাড়াও ওই নির্দিষ্ট দূরত্বের ভাড়াও তাঁকে জরিমানা দিতে হয়। এ সব ক্ষেত্রে অনেক যাত্রী ‘ভুলের’ জন্য দায় চাপান কাউন্টারের কর্মীর উপরে। তবে কাউন্টারের কর্মীদের একাংশের ভুলের ঘটনাও বিরল নয়।

Advertisement

এই সব বিপত্তি এড়াতে মেট্রোর কাউন্টারে এখন গন্তব্য স্টেশনের নাম না বললে আর টোকেন পাওয়া যায় না। অতীতে অনেকেই ৫, ১০ বা ১৫ টাকার টোকেন কাউন্টারে গিয়ে সরাসরি দাবি করতেন। সেই পরিমাণ টাকার বিনিময়ে টোকেন দেওয়া হত। কিন্তু তাতে নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য কম দামের টোকেন দেওয়ার অভিযোগ মাঝেমধ্যেই উঠত। টিকিটের বিষয়টি যাত্রীর নিজে দেখে নেওয়া নিশ্চিত করতে বছরকয়েক আগে কাউন্টারে ভিডিয়ো স্ক্রিন বসানো হয়। সেখানে টোকেন বা স্মার্ট কার্ড কেনার সময়ে মূল্যের অঙ্ক ফুটে ওঠে। এর পরেও অবশ্য উপযুক্ত মূল্যের টোকেন না কিনে সফর করা যাত্রী প্রতিদিনই কিছু না কিছু পাওয়া যায়। তাই উপযুক্ত মূল্যের টোকেন কেনার বার্তা দেওয়াই সঙ্গত বলে মনে করেন অনেকে।

মেট্রো আধিকারিকদের দাবি, রেলের ব্যবস্থা অনুযায়ী মেট্রো চলে। ফলে ওই ঘোষণার মধ্যেও সেই প্রবণতাই রয়েছে। অন্য অংশের দাবি, মেট্রোয় বিনা টোকেনের যাত্রী বিরল হলেও একেবারে মেলে না, এমনটা নয়। ভিড়ের সময়ে টোকেন ছুঁইয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের স্মার্ট গেট খোলার সময়ে এক জন যাত্রীর গা ঘেঁষে (টেল গেটিং) অন্য যাত্রী পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, এমনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটে। গেটে কর্তব্যরত কর্মীরা সে ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেন। তাঁদের চোখ এড়িয়ে ঢুকলেও প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরোতে গিয়ে ধরা পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

তবে মেট্রোর এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘বিনা টিকিট বা টোকেনের যাত্রী ঠেকাতে মেট্রোর ছাঁকনি প্রযুক্তি সাধারণ রেলের তুলনায় অনেক নিপুণ। যদিও তা নিশ্ছিদ্র নয়। সেই জন্যই সাধারণ ভাবে ওই ঘোষণা রাখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement