প্রতীকী ছবি।
এ যেন কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষ মাস!
করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দফায় দফায় সরকারি বিধিনিষেধ, লকডাউন নিয়ে জেরবার মানুষ ও প্রশাসন। ফলে পুরসভাগুলির দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজের গতি ও নজরদারি ব্যাহত হয়েছে। আর সেই সুযোগের অপব্যবহার করে দেদার অবৈধ নির্মাণ মাথা তুলছে। এমনই ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার নরেন্দ্রপুর ও সোনারপুর থানায়।
পুর কর্তৃপক্ষ মানছেন, করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুর আধিকারিক ও প্রশাসনিক কর্তারা অবৈধ নির্মাণে নজরদারি চালাতে পারেননি। তারই ফাঁক গলে জলাজমি বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণ ও একাধিক বসত বাড়িতে নীতি-বিরুদ্ধ নির্মাণ হয়ে চলেছে। কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। পুর কর্তাদের কথায়, ৩৫টি ওয়ার্ড থেকেই জলাজমি বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণ ছাড়াও, বহু বসত বাড়িতে রমরমিয়ে অবৈধ নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ আসছে। তবে গড়িয়া অঞ্চলের ৩, ৪ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অভিযোগ বেশি এসেছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
আবার পুর আইনের তোয়াক্কা না করে একতলাকে দোতলা, দোতলাকে তিনতলা করে নেওয়া হয়েছে। সে সব ক্ষেত্রে বাড়ির নকশা অনুমোদনের আর্জি পর্যন্ত জানানো হয়নি। অভিযোগ, কিছু বাড়ি তৈরি হয়েছে কোনও নকশার অনুমোদন ছাড়াই! সেই সব বাড়ি, আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিবেশীরাই পুর কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, “বহু অভিযোগ পেয়েছি। সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণের মাত্রা কম হলে জরিমানা করা হবে। কিন্তু যদি দেখা যায়, পুরোটাই অবৈধ নির্মাণ হয়েছে, তা হলে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হবে।”
কী ভাবে বসত বাড়ির অবৈধ নির্মাণ পর্যবেক্ষণ করবেন পুর আধিকারিকেরা?
পুরসভা সূত্রের খবর, অভিযোগ পেলে বসত বাড়ির মালিককে নোটিস পাঠিয়ে পুর অনুমোদিত নকশা কর্তৃপক্ষ জমা দিতে নির্দেশ দেবেন। ওই নকশার সঙ্গে বাড়ির বাস্তব পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখা হবে। নকশা বহির্ভূত নির্মাণের জন্য জরিমানা অথবা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ জারি হবে।
পল্লববাবু বলেন, “এই ধরনের ঘটনায় কোনও শিথিলতা দেখানো হবে না। পুর আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুরসভা জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। এলাকা ধরে ধরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সাহায্যও নেওয়া হবে।