জমা জল ঠেলেই স্কুলের পথে। মহেশতলার গোপালপুর সরকারপুল শিবরামপুর রোডে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
গলি থেকে শুরু করে বড় রাস্তা। পাড়া থেকে শুরু করে ঝাঁ চকচকে আবাসন। মহেশতলা পুরসভার বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টি থামার তিন দিন পরেও জল জমে রয়েছে। অভিযোগ, জমা জলে শুধু যাতায়াতের দুর্ভোগই হচ্ছে না। নানা অসুখ-বিসুখও হচ্ছে।
মহেশতলার শিবরামপুরের কাছে একটি বিলাসবহুল আবাসনের এলআইজি ব্লকে ঢুকলে মনে হবে সেটি যেন পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছে। আবাসনের নীচে জল জমে থাকায় বেশির ভাগ গ্যারাজে গাড়ি নেই। আবাসনের ভিতরে ব্লকে ঢোকার গেটেও জল। আবাসনের ব্লকগুলোয় লোকজনের দেখা মিলছে না। মাঝেমধ্যে দু’-একটা গাড়ি চলতে দেখা যাচ্ছে আবাসনের রাস্তায়।
ওই আবাসনের এলআইজি ব্লকে থাকেন পাঁচশোর বেশি বাসিন্দা। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, তিন দিন ধরে জল জমে থাকায় খুব দরকার ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না। পার্কিং লটে জল জমায় আবাসনের প্রতিটি লিফট বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে যাঁরা চারতলায় থাকেন তাঁদের দুর্ভোগ সব থেকে বেশি। এমনই এক আবাসনে পরিবার নিয়ে থাকেন পূর্ণেন্দু দুবে। তাঁর স্ত্রী মনীষা দুবে জানান, তাঁর দেড় বছরের ছেলের জ্বর। কিন্তু জল পেরিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে পারছেন না। মনীষা বলেন, ‘‘জমা জল থেকে মশাও বেড়েছে ঘরে। গত দু’দিন ধরে মশার এত উপদ্রব যে দিনের বেলাতেও মশারি টাঙিয়ে মশারির নীচে বাচ্চাকে রাখতে হচ্ছে।’’ আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক টাকা খরচ করে তাঁরা ওই আবাসনের ফ্ল্যাট কিনেছেন। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না করেই আবাসন কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে দিয়েছেন। যদিও ওই আবাসনটি যে সংস্থা তৈরি করছেন তাঁদের এক পদস্থ কর্তা রাজীব আগরওয়াল বলেন, ‘‘নিকাশি নালা ঠিকই আছে। কিন্তু আবাসনের পাশে যে বড় খাল রয়েছে, ভারী বৃষ্টিতে সেটির জল ধারণক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই পাম্প চালিয়েও পুরো জল দ্রুত বার করা যাচ্ছে না।’’
ওই আবাসন থেকে বেরিয়ে মহেশতলা পুরসভার গোপালপুর, বিশ্রামপুর, শিবরামপুরেরও বেশ কিছু গলির ভিতরে রাস্তায় জল জমে থাকতে দেখা গেল। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবার ভারী বৃষ্টিতেই একই অবস্থা হয়। গোপালপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘জমা জল থেকে মশার উৎপাত বাড়লে আবার ডেঙ্গির আতঙ্ক শুরু হবে। প্রতিবার বৃষ্টির পরেই তো শুরু হয় ডেঙ্গির আতঙ্ক।’’
মহেশতলা পুরসভার প্রধান দুলাল দাস বলেন, ‘‘পাম্প চালিয়ে জল নামানো হচ্ছে। নিকাশি নালায় প্লাস্টিক জমে নর্দমার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। মানুষকে এই নিয়ে আরও সচেতন হতে হবে।’’