রতন কর্মকার
টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছিল। স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল ট্রেনও। টিকিট দেখে শুধু আসন খুঁজে বসে ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষা!
যদিও শেষমেশ আর সেই যাত্রা শুরু হয়নি। কলকাতা স্টেশনে ঢোকার মুখেই শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন চোর সন্দেহে মানিকতলায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সৌমেন সরকার। এ নিয়ে ওই ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিন। প্রথমে গ্রেফতার হন তাপস সাহা। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হন সুরজিৎ কুন্ডু ওরফে গৌর। তাপসের মতো সুরজিৎকেও এ দিন আদালতে তোলা হলে তাঁকে ২০ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। থানার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘তিন জন ধরা পড়েছে। দীপ নামের ছেলেটিও দ্রুত গ্রেফতার হবে।’’
থানা সূত্রের খবর, দুপুরে সৌমেনকে গ্রেফতার করে মানিকতলা থানায় নিয়ে গিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তা থেকেই তদন্তকারীরা বেশ কিছু নতুন তথ্য পেয়েছেন।
জানা গিয়েছে, গত বুধবার মানিকতলার হরিশ নিয়োগী রোডে রতন কর্মকার নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন সৌমেন। এই ক’দিন বেহালায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন তিনি। বেশি দিন এক জায়গায় থাকলে ধরা পড়ে যেতে পারেন ভেবে শনিবার তিনি কলকাতা ছেড়ে উত্তরবঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেই মতো যাতায়াত এবং থাকা-খাওয়ার জন্য কিছু টাকাও চেয়ে পাঠান এক পরিচিতের কাছ থেকে। সৌমেনের নামে কাটা হয় রেলের টিকিটও। সেই ট্রেনে কলকাতা ছাড়ার আগেই ওই পরিচিতের সূত্রেই খবর পায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত আরও জানিয়েছেন, রতন তাঁদের পূর্ব পরিচিত। এর আগেও চোর সন্দেহে তাঁকে ধরে মারধর করে টাকা নিয়েছেন তাঁরা। ঘটনার বেশির ভাগটাই দীপের পরিকল্পনা বলেও জানিয়েছেন সৌমেন। ঘটনার দিন খন্নার হাট থেকে দীপই রতনকে প্রথমে ধরেন। এর পরে তাঁকে আর সুরজিৎকে ফোন করে দীপই ডেকে নেন। ক্লাবে ঢুকিয়ে মারের মাঝেই তাঁরা ফোন করেন রতনের বাড়িতে। তবে রতন যে মরে যেতে পারেন, তা তাঁরা বোঝেননি বলে ধৃতদের দাবি। দীপকে দ্রুত গ্রেফতার করে সব ধৃতকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার পরিকল্পনা রয়েছে মানিকতলা থানার আধিকারিকদের। তদন্তকারীরা এ দিনও দেখে এসেছেন ঘটনাস্থল। গোটা তদন্তে নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।