Fire Accident

Fire Accident: অগ্নিকাণ্ডে ধৃত ম্যানেজার, মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রবিবার মৃত নিরাপত্তাকর্মী কানাইবাবুর দেহের ময়না-তদন্ত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৩
Share:

কানাইচন্দ্র সাঁতরা।

কৈখালিতে রঙের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার ম্যানেজারকে গ্রেফতার করল বিমানবন্দর থানার পুলিশ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। পবন আগরওয়াল নামে ওই ম্যানেজারকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার অবশ্য ব্যারাকপুর এসিজেএম আদালত থেকে জামিন পান তিনি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, কৈখালির ওই রঙের কারখানার মালিকের নাম চিত্তরঞ্জন ভট্টাচার্য। পবন তাঁর আত্মীয়। তদন্তকারীরা জানান, পবনের নামে কারখানার মালিকানা বদলের প্রক্রিয়া চলছিল। তার মধ্যেই শনিবারের ওই ঘটনা। কারখানায় অগ্নি-বিধি মানা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। অগ্নিকাণ্ডে এক জনের মৃত্যু হওয়ায় এবং কারখানার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পবনের উপরে থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেই দাবি পুলিশের।

কৈখালির চিড়িয়ামোড়ের কাছে ওই রঙের কারখানায় শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ আগুন লাগে। সেই আগুন ঠিক পাশে একটি গেঞ্জির গুদামেও ছড়িয়ে পড়ে। পাশের আর একটি গুদামের দেওয়ালও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই ঘটনায়। উদ্ধারকারী স্থানীয় যুবকেরা জানিয়েছিলেন, কারখানার কেমিস্ট ও কয়েক জন কর্মীকে তাঁরা উদ্ধার করলেও সেখানকার বৃদ্ধ নিরাপত্তাকর্মী কানাইচন্দ্র সাঁতরা (৬৫) ভিতরে আটকা পড়ে রয়েছেন। তার পরে শনিবার বিকেলে কানাইবাবুর দগ্ধ দেহ ওই কারখানার ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

রবিবার বিধাননগর পুলিশের ডিসি (সদর) সূর্যপ্রতাপ যাদব জানান, পূজা কেমিক্যালস নামে ওই রঙের কারখানার মালিক চিত্তরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রবিবার মৃত নিরাপত্তাকর্মী কানাইবাবুর দেহের ময়না-তদন্ত হয়। নাদিয়াল থানা এলাকার বাসিন্দা কানাইবাবু দীর্ঘদিন ধরেই নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন বিভিন্ন সংস্থায়। তাঁর ছেলে কৌশিক জানান, গত দু’-তিন মাস ধরে কানাইবাবু ওই কারখানায় কাজ করতেন। সেখানেই থাকতেন। এ দিন কৌশিক বলেন, ‘‘শনিবার সকালেও বাবা বাড়িতে ফোন করে আমাদের খোঁজখবর নিয়েছিলেন। ভাবতেই পারছি না, বাবার এ ভাবে মৃত্যু হবে। আমি সামান্য শ্রমিকের কাজ করি। সংসারে অভাব থাকায় বয়স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বাবা চাকরি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। কারখানায় কোনও রকম অগ্নি-বিধি মানা হয়নি বলেই বাবাকে এ ভাবে চলে যেতে হল। মালিকপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইব।’’

পুড়ে যাওয়া ওই রঙের কারখানার আশপাশে আরও বেশ কয়েকটি বিভিন্ন ধরনের কারখানা রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই রং কারখানার গুদামেও কয়েক বছর আগেও এক বার আগুন লেগেছিল। বিধাননগর পুরসভার অধীন রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার অনেক জায়গাতেই নানা ধরনের কারখানা রয়েছে। শনিবারের ওই ঘটনার পরে সেই সব কারখানার অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থা কী অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে দমকল বিভাগ এবং পুরসভার নজরদারি আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু রবিবার বলেন, ‘‘পুরসভা লাইসেন্স দেয় কারখানাকে। কারখানাগুলির কী অবস্থা, দমকলের পাশাপাশি পুরসভাকেও সে দিকে নজর রাখতে হবে। আমি বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’

যদিও বিধাননগর পুরসভার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের দাবি, শুধু পুরসভা নয়। দমকল এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেও এ সব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা দেখব ওই কারখানাটির বৈধ নথিপত্র কী রয়েছে। সব নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা অন্য দফতরের দেখার কাজ।’’ আজ, সোমবার আগুনের কারণ খতিয়ে দেখতে ওই কারখানায় ফরেন্সিক বিভাগের যাওয়ার কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement