পিঙ্কির সঙ্গে পোষ্য রকি, পাশে বসে প্রসেনজিৎ।
রথযাত্রার ভোরে কালীঘাটের ১৪নং ভট্টাচার্য লেনের এক বাড়িতে হইহই রব! পুব আকাশে তখন সূর্য উঠবে উঠবে করছে। গোটা এলাকা ভোরের ঘুমে আচ্ছন্ন। এমন সময়ই বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ল চোর! তার পর রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটল। পরিবারের তিন মহিলা সদস্যের যুদ্ধংদেহি চেষ্টায় পাকড়াও করা হয়েছে চোরকে।
ঠিক কী ঘটেছে?
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীঘাটের ওই এলাকায় একটি বাড়িতে ভোর পাঁচটা নাগাদ চুরির উদ্দেশে এক ব্যক্তি ঢুকে পড়ে। প্রথমে গৃহকর্ত্রী ভেবেছিলেন, হয়তো তাঁরই বাড়ির কোনও সদস্য ঘরের মধ্যে রয়েছেন। তার পরই সন্দেহ হওয়ায় ঘরে ঢুকতেই চোরকে দেখতে পান তিনি। চিৎকার করে চোরকে ধরার চেষ্টা করেন দীপা চক্রবর্তী। ওই ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন তাঁর ননদ রত্না চট্টোপাধ্যায়। চেঁচামেচিতে তাঁরও ঘুম ভেঙে যায়। তিনিও চোরকে ধরার চেষ্টা করেন। এর পর ওই ঘরে আসেন বাড়ির ছেলে প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তত ক্ষণে ধারালো অস্ত্র বের করেছে চোর। তা দিয়েই প্রসেনজিতের গলা, মাথায়,পিঠে একাধিক কোপ মারে সে। ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে ছুটে আসেন দিদি পিঙ্কি চক্রবর্তী। তাঁকেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়। সেই আঘাত সহ্য করেই চোরকে ধরে ফেলেন তিনি। বাড়ির কুকুর রকি অভিযুক্তের পা ধরে ফেলে। তখনই রীতিমতো চক্রব্যুহে আটকে পড়ে চোর। পরে পুলিশের হাতে চোরকে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন পিঙ্কি।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পিঙ্কির পিসি রত্নার ঘরেই চোর ঢুকেছিল। সেখানে বিগ্রহ ছিল। ঠাকুরের গয়না, সোনার গয়না, নগদ টাকা চুরি করেছে অভিযুক্ত। এমনকি, ফ্রিজ থেকে আইসক্রিমও খেয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। প্রথমে চুরি করে কিছু গয়না কাগজে মুড়ে এলাকার একটি গলিতে রেখে এসেছিল চোর। সেই কাগজে মোড়া গয়না উদ্ধার করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। মনে করা হচ্ছে, প্রথমে চুরি করে আবার ওই বাড়িতে হানা দেয় চোর।
পিঙ্কির দাদা প্রসেনজিৎকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মাথায় ১৮টি, পিঠে ১৪টি, গলায় নয়টি সেলাই পড়েছে।