প্রতীকী ছবি।
তখন রাত ন’টা বাজতে কিছু সময় বাকি। আপাত শান্ত বাগুইআটি থানায় হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন এক ব্যক্তি। থানার বড়বাবুর কাছে গিয়ে জানালেন, স্ত্রীকে খুন করে এসেছেন তিনি। সে কথা শুনেই পুলিশ দ্রুত তাঁর বলা ঠিকানায় পৌঁছে এক মহিলার দেহ দেখতে পান। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম অঙ্কিতা সাহু। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্বামী কুঞ্জবিহারী শর্মাকে।
বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনার তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বাসিন্দা অঙ্কিতার সঙ্গে রাজস্থানের কিষানগঞ্জের বছর ঊনত্রিশের কুঞ্জবিহারীর বিয়ে হয়। বাড়িতে না জানিয়ে বিয়ে করেন ওই যুবক। দু’মাস আগে ওই দম্পতি বাগুইআটির সাহাপাড়ার একটি ফ্ল্যাটের তিনতলায় ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, কুঞ্জবিহারী কাজ খুঁজছিলেন। অঙ্কিতার টাকাতেই তাঁদের সংসার চলত। পুলিশকে ধৃত জানিয়েছেন, এই নিয়ে স্ত্রী তাঁকে কথা শোনাতেন। পাশপাশি, তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কও সুখের ছিল না। দম্পতির মধ্যে এ সব নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। ঘটনার দিনেও সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে ফের দু’জনের অশান্তি শুরু হয়। এক সময়ে তা চরমে পৌঁছয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অশান্তি চলাকালীন উত্তেজনার বশে কুঞ্জবিহারী প্রথমে স্ত্রীর গলা টিপে ধরেন। তার পরে মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করেন।
ঘটনার কথা জানতে পেরে অঙ্কিতার এক আত্মীয় ওই রাতেই বাগুইআটি থানায় বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কুঞ্জবিহারীকে প্রথমে আটককরা হলেও এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে পরে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন এবং খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অঙ্কিতার দেহ ময়না-তদন্তের জন্য আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট পেলে পুলিশ মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে। এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ধৃতকে শুক্রবার বারাসত আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।