শিবম পান্ডে।
‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্তা’ বলে নেটমাধ্যমে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন ২২ বছরের এক যুবক। বিষয়টি ভারতীয় সেনার কলকাতার গোয়েন্দা বিভাগের নজরে পড়ে। প্রায় এক মাস ধরে তাঁর উপর নজরদারি চালিয়ে মঙ্গলবার নিউ মার্কেট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিয়ে আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ওই ভুয়ো সেনাকর্তার চার শাগরেদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পাঁচ জনকেই তুলে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের হাতে।
গ্রেফতার হওয়া ওই জাল সেনাকর্তার নাম শিবম পান্ডে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তাঁর পরনে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধের সময় পরার পোশাক। এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেলের পদমর্যাদার বেশ কয়েক প্রস্থ পোশাক এবং একটি ভুয়ো সেনা-পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে তাঁর কাছ থেকে। গোয়েন্দাদের অনুমান, ওই পরিচয়পত্র এবং পোশাকের সাহায্যেই সেনা অফিসার সেজে ঘুরে বেড়াতেন শিবম।
বরাবরই নেটমাধ্যমে সক্রিয় ওই যুবক। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে বেশ ফলাও করেই লেখা আছে তাঁর ভুয়ো সেনাকর্তা-পরিচয়। সেখানেই শিবম এ-ও দাবি করেছেন যে, তিনি ভারতীয় বাহিনীর চিনার কোর-এ নিযুক্ত। চিনার কোর আসলে শ্রীনগরে সেনা অভিযানের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় সেনার সেই শাখা, যারা চিন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সবক’টি সংঘর্ষেই এ যাবৎ অংশ নিয়েছে। নিজের নেটমাধ্যম অ্যাকাউন্টে ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর প্রধানের নাম করে বই বিক্রি করতেও শুরু করেছিলেন শিবম। সেই বইয়ের নাম ‘ভারতীয় সেনা কি আনকহি কহানি’।
ভারতীয় সেনার কলকাতার গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, শিবমের কার্যকলাপ তাদের অস্বাভাবিক লাগলেও প্রথমেই তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি। প্রায় এক মাস তাঁর উপর নজর রেখে তারা নিশ্চিত হয়, শিবম ভারতীয় সেনার কর্মী নন। তিনি একজন প্রতারক। তবে তাঁর কিছু সঙ্গীও রয়েছেন। কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিয়েই কলকাতায় ফাঁদ পাতা হয় শিবমের জন্য। কলকাতায় সেই ফাঁদেই ধরা পড়েন শিবম। আপাতত কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।