Crime

চোরাই ফোন ‘দান’ করে শ্রীঘরে ১২টি চুরির মাথা

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আনলক-পর্বের শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন ফাঁকা বাড়ি থেকে চুরির অভিযোগ আসছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনমজুরের কাজ করতে শহরে এসে লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন এক মহিলা। আর তাঁকে চোরাই মোবাইল ‘দান’ করে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল বিভিন্ন থানা এলাকায় একাধিক চুরিতে মূল অভিযুক্ত! কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম তাপস দে (২৫)। বুধবার আদালতে তোলা হলে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আনলক-পর্বের শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন ফাঁকা বাড়ি থেকে চুরির অভিযোগ আসছিল। সিঁথি থানার একটি পাড়া থেকেই এমন তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়। একই ধরনের একাধিক অভিযোগ ছিল চিৎপুর এবং টালা থানায়। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও কোনওটিরই কিনারা করতে পারছিল না পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানান, এরই মধ্যে সিঁথি থানা এলাকার একটি চুরির ঘটনাস্থলে গিয়ে সূত্র মেলে। জানা যায়, সেটির পাশে একটি নির্মাণস্থল থেকেও একটি মোবাইল চুরি গিয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই নির্মাণস্থল থেকে চুরি যায় বোতামওয়ালা একটি পুরনো মোবাইল। সেই মোবাইলটি চিহ্নিত করে হাওড়ার শ্যামপুরে পৌঁছন তদন্তকারীরা। এক মহিলার থেকে ফোন উদ্ধার হয়।

Advertisement

ওই মহিলা পুলিশকে জানান, তিনি দিনমজুরের কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। কাজ শেষে তাঁকে নিয়ে যান স্বামী। মহিলা আরও জানিয়েছেন, সিঁথির মোড়ে এক দিন স্বামীর অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ বসে থেকেও তিনি আসছেন না দেখে এক ব্যক্তির কাছ থেকে স্বামীকে ফোন করার জন্য মোবাইল চান তিনি। মহিলার দাবি, তখনই দাম না-নিয়ে এক যুবক তাঁকে ওই মোবাইলটি দিয়ে দেয়। মহিলা টাকা দেওয়ার জন্য জোর করলে যুবকটি নাম এবং ফোন নম্বর দিয়ে বলে, ‘‘আমার নাম তাপস। কলকাতায় আবার এলে টাকা মিটিয়ে দেবেন।’’

তদন্তকারীদের দাবি, তাপসের চেহারার যে বিবরণ দিয়েছিলেন মহিলা, তার সঙ্গে উত্তর কলকাতার কুখ্যাত চোর তাপস দে-র চেহারার ভীষণ মিল পান তাঁরা। কিন্তু তাপসের হদিস মেলেনি। তার দেওয়া ফোনটিও বন্ধ ছিল। এর পরে পুরনো নথি ঘেঁটে তদন্তকারীরা দেখেন, হাজতের বাইরে থাকলে যৌনপল্লিতে যাতায়াত করে তাপস। তার পরেই সাদা পোশাকে সোনাগাছিতে নজরদারি চালানো শুরু হয়। কিন্তু এক মাস কেটে গেলেও অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

শেষে সোর্স মারফত খবর পেয়ে গিরিশ পার্ক এলাকার রামবাগান যৌনপল্লিতে নজরদারি শুরু করেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার সেখান থেকেই ধরা পড়ে তাপস। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের থেকে টাকা, সোনার গয়না এবং বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ উদ্ধার হয়েছে। শুধু কলকাতা পুলিশ এলাকার বিভিন্ন থানাতেই নয়, লেক টাউন, বাগুইআটি-সহ জেলার বেশ কিছু থানাতেও তাপসের বিরুদ্ধে চুরির মামলা ঝুলছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement