মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘‘বড়বাজারের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? দু’দিন আগেও আগুন লেগেছিল। তার আগে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লেগেছিল। আমরা চার দিন বসেছিলাম সেখানে।’’— বৃহস্পতিবার হকার প্রসঙ্গে নবান্নে এক বৈঠকের মধ্যে বড়বাজার সম্পর্কে এ ভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বড়বাজারের বাড়ি ও বাজার সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেক বাড়িই ভেঙে পড়তে পারে। অবিলম্বে সংস্কার জরুরি। অনেক বাজার রয়েছে, দেখেই ভয় লাগে। এমন পরিস্থিতি যে, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বৈঠকে বড়বাজারের এক হকার-প্রতিনিধি কিছু বলতে গেলে, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘বড়বাজারটা ভাল করে দেখুন। প্লাস্টিক রেখে দিচ্ছেন। আগুন লেগে যাচ্ছে।’’ এর পরেই তিনি বলে ওঠেন, ‘‘কলকাতার পুলিশ কমিশনার বড়বাজারের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিন।’’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বিকেলে বাগড়ি মার্কেটের উল্টো দিকে মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছিল। এ দিনের বৈঠকে দমকলের আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বড়বাজারের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেখুন।’’ মঙ্গলবার বিকেলে বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিংয়ের তেতলায় যেখানে আগুন লেগেছিল, সেখানে প্রচুর বেআইনি রাসায়নিক পদার্থ মজুত ছিল বলে দমকলই জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই বাড়িটিতে যান দমকল ও ফরেন্সিকের আধিকারিকেরা। এর আগে ২০১৭ সালের মে মাসে বড়বাজারের আর্মেনিয়ান স্ট্রিটে মজুত করে রাখা রাসায়নিক বিস্ফোরণে ১০ জন দমকলকর্মী আহত হয়েছিলেন। তারও আগে, বড়বাজারের নন্দরাম মার্কেট ও বাগড়ি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেই সময় লেগেছিল কয়েক দিন।
বড়বাজারের মোট জায়গার ৭৫ শতাংশ ব্যবসা কেন্দ্রিক। বাকি ২৫ শতাংশে বসবাস। এই অবস্থায় ঘিঞ্জি ওই জায়গায় প্লাস্টিক, প্লাস্টিকজাত দ্রব্য, রাসায়নিক পদার্থ মজুত ও বিক্রি বেড়েই চলেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ঔরঙ্গজেব আলমগির খানের অভিযোগ, ‘‘বড়বাজারে বার বার আগুন লাগে। তার পরেও এখানে বেআইনি ভাবে রাসায়নিক ও প্লাস্টিকের গুদাম রয়েছে। পুরসভা, দমকলকে চিঠি দিয়েও কাজ হয় না।’’