সেজেগুজে তৈরি বাংলার রসগোল্লা। নিজস্ব চিত্র।
এখন রাইসিনা হিলসের বাসিন্দা হলেও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আদতে ওড়িশার মানুষ। ওই রাজ্যে মন্ত্রীও থেকেছেন দেশের প্রথম নাগরিক। কলকাতায় রাজ্য সরকারের তরফে দ্রৌপদীকে যখন নানা কিছু উপহার দিয়ে বরণ করে নেওয়া হবে, তখন ওড়িশাকে হারিয়ে নিজস্বতার তকমা পাওয়া বাংলার রসগোল্লাও থাকবে। ইতিমধ্যেই কলকাতার বিখ্যাত দোকান থেকে নীল-সাদা মোড়কে সেজে তৈরি রসোগোল্লার কাচের হাঁড়ি। সে হাঁড়ির পাগড়িও রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথম থেকেই নীল-সাদাকে বাংলার সরকারি রং হিসেবে তুলে ধরেছেন। সেই নীল-সাদা রঙের ব্যবহার ছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানে। ‘নীল-সাদা’ হাঁড়িতে করে রসগোল্লা দিয়েছিল নবান্ন। এ বার রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। তবে এ বার নীল-সাদা হাঁড়িতে নয়, কাচের হাঁড়িতে থাকছে রসগোল্লা। তবে তার সাজ পুরোটাই নীল আর সাদা রঙে। রাজ্যপালকে দেওয়া হয়েছিল ২৬ টাকা দামের একশোটি রসগোল্লা সাজিয়ে । তবে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হচ্ছে পরিমাণে কম। এক একটি ২৫০ গ্রাম ওজনের ২৪টি রসগোল্লা থাকছে হাঁড়িতে।
বাংলার রসগোল্লা ভুবনখ্যাত। ওড়িশার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে নিজস্বতার স্বীকৃতিও পেয়েছে বাংলা। পশ্চিমবঙ্গে রসগোল্লার জন্য ভারত সরকারের কাছে ‘জি আই’ (জিওগ্র্যাফিকাল ইন্ডিকেশন) ট্যাগের জন্য আবেদন জানালে প্রতিবেশী রাজ্য তথা দ্রৌপদীর ওড়িশা থেকেই বিরোধিতা এসেছিল। দাবি ছিল, উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বহু বাঙালি পরিবারে ওড়িশারা পাচকের কাজ করতেন। তাঁরাই রসগোল্লার রেসিপি ওড়িশা থেকে বাংলায় নিয়ে আসেন। পাল্টা বাংলার বক্তব্য ছিল, ওড়িশার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রসগোল্লার অনেক ফারাক রয়েছে। শুধু ছানা দিয়ে তৈরি যে গোল মিষ্টি রসে জারিয়ে তৈরি হয়, সেটির উদ্ভাবক বাংলাই। অবশেষে বাংলার দাবি স্বীকৃতি পায় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। সেই থেকে ১৪ নভেম্বর দিনটি বাংলায় ‘রসগোল্লা দিবস’ হিসাবে পালিত হয়। আজ উপহার পাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীও হয়তো বুঝতে পারবেন স্বাদে, চেহারায়ও ওড়িশার থেকে অনেক আলাদা বাংলার রসগোল্লা।