সিবিআইকেও সময়সীমা বেঁধে দিলেন মমতা। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। এ বার সিবিআইকে তদন্তের জন্য সময় বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, রবিবারের মধ্যে সিবিআইকে তদন্ত সম্পূর্ণ উদ্ঘাটিত করতে হবে। বুধবার সন্ধ্যায় হাজরা মোড়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালের এক অনুষ্ঠানে গিয়েছেন মমতা। সেখানে তিনি বলেন, “আগামী রবিবারের মধ্যে সিবিআইকে ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুরোপুরি তদন্ত (রহস্য) উদ্ঘাটিত করতে হবে। আমাদের কলকাতা পুলিশ ৯০ শতাংশ তদন্ত করে দিয়ে এসেছে।”
সোমবার আরজি করের মৃত মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও। তখনই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কলকাতা পুলিশকে রবিবার পর্যন্ত সময় দিচ্ছেন তিনি। তার মধ্যে তদন্তের কোনও ‘কিনারা’ না হলে, এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তার পরই আরজি কর-কাণ্ডে তদন্তকারী সিটের সদস্য সংখ্যা সাত থেকে বাড়িয়ে ১২ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সিটকে সহায়তা করার জন্য আরও ১৫০ জন পুলিশকর্মীর দল বানানো হয়েছিল।
কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশের হাত থেকে বেরিয়ে যায় আরজি কর মামলার তদন্তভার। রবিবার পর্যন্তও সময় পেল না পুলিশ। তার আগেই হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার পায় সিবিআই। মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ, পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং তদন্তভার দিয়ে দেয় সিবিআইকে। হাই কোর্টের নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টালা থানায় পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। রাতেই মামলার নথিপত্র হস্তান্তর হয়।
বুধবার সকালে সিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল দিল্লি থেকে চলে আসে কলকাতায়। সকাল থেকে একাধিক দলে ভাগ হয়ে শুরু হয় তদন্ত প্রক্রিয়া। আরজি করেও গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এ সবের মধ্যেই এ বার সিবিআইকে সময়সীমা বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন সময়সীমা তিনি কলকাতা পুলিশকে দিয়েছিলেন, সেই একই সময়সীমা দিয়ে রাখলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও। তাঁর দাবি, কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই ৯০ শতাংশ তদন্ত করে ফেলেছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভোরে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলায় সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় শনিবার সকালেই অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত আবার পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার বলে সূত্রের দাবি। যদিও সে বিষয়টি স্পষ্ট না করেই পুলিশ কমিশনার জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে ধৃতের পরিচয় একটাই— ধৃত একজন অপরাধী। স্বচ্ছ ভাবে তদন্ত হবে বলেও আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। পুলিশ কমিশনার একাধিক বার বলেছিলেন, পুলিশের কাছে লুকানোর কিছু নেই।