নবনির্মিত ‘জয় হিন্দ’ ব্রিজ। —নিজস্ব চিত্র
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করলেন মাঝেরহাট সেতুর। বিকেল ঠিক ৫টা ১৯ মিনিটে বোতাম টিপে ব্রিজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এর পর নবনির্মিত ‘জয় হিন্দ’ ব্রিজের উপর নিজেই হেঁটে পরিদর্শনে যান। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম-সহ অনেক নেতা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে রেলকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘রেল অনুমতি দিলে ৯ মাসেই চালু করা যেত ব্রিজ। রেলের কাছে বারবার দরবার করতে হয়েছে। রেল কেন আমাদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে? রেল কেন আমাদের থেকে টাকা নেবে? আমরা করব, আর নাম কিনবে ওরা? এমনকি টালা ব্রিজ ভাঙতেও টাকা নিয়েছে রেল।’’ কলকাতায় ভবিষ্যতে একাধিক সেতু হওয়ার কথাও এই অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই উৎসাহী মানুষের ভিড় ছিল। প্রায় ২ বছর ৩ মাস বন্ধ থাকার পর চালু হচ্ছে সেতু। সে নিয়ে স্থানীয়দের উৎসাহ ছিল চরমে। অনেক দূর থেকে মানুষ এলেও ব্রিজের কিছুটা আগে থেকেই তাঁদের আটকানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে কড়া নিরাপত্তার মোড়কে ঘিরে ফেলা হয় এলাকা। চেয়ার দিয়ে রাস্তা আটকানো হয় সেতুর দু’দিক থেকে। কেউ সেলফি তুলছেন। পুরো উৎসবের আবহাওয়া।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি হওয়া মাঝেরহাট ব্রিজে উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নির্দশন হিসেবেই নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজটি। অতিরিক্ত ওজন ব্রিজের উপর পড়লে জানিয়ে দেবে সেন্সর। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, অতিরিক্ত ভার হলে সেন্সরের মাধ্যমে সরাসরি সিগন্যাল পৌঁছে যাবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। সেই সিগন্যাল পেলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ ছাড়াও দুর্ঘটনা এড়াতে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এই ব্রিজে। থাকছে একাধিক ক্যামেরা। কলকাতায় এই প্রথম কোনও সেতু কেবলের সহযোগে নির্মিত। সূত্রের খবর, সেতুটি সর্বোচ্চ ৩৮৫ মেট্রিক টন ভার নিতে পারবে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৩৬ মিটার। চওড়া ১৬ মিটার।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
নতুন ব্রিজ চালু হলে বেহালা, ঠাকুরপুকুর, জোকা, মহেশতলা, বজবজ-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে।
আরও পড়ুন: আজ মাঝেরহাট সেতু উদ্বোধন, যানজট এড়াতে গাড়ির রুট পরিবর্তন
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিজটির একাংশ ভেঙে পড়ে। তারপর পুজোর মধ্যে খুব দ্রুত রেল লাইনের উপর দিয়ে একটা বেইলি ব্রিজ তৈরি করে যান চলাচল করা হয়।