Coronavirus

ভাড়া না বাড়লে রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব, দাবি বাসমালিকদের 

করোনা জাঁকিয়ে বসেছে, এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শহরে গণ পরিবহণ চালু হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০৫:০৬
Share:

স্তব্ধ: বর্ধিত ভাড়ায় রাজ্যের আপত্তিতে বেসরকারি বাসের পথে নামা নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা। রবিবার, গল্ফ গ্রিনের রাস্তার পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে মিনিবাস। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

ভাড়া না বাড়ানো, আর ভর্তুকির পরিণাম পরিবহণ ব্যবস্থার কতটা বেহাল দশা করতে পারে, তা অতীতে একাধিক বার দেখা গিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিংবা তাপ্পি দেওয়া টায়ার ব্যবহারের জেরে বাস-দুর্ঘটনার একাধিক নজির রয়েছে। এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে করোনার ছোঁয়াচের আশঙ্কা। ছোঁয়াচ এড়াতে সরকারি নিয়মে একসঙ্গে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী বাসে উঠতে পারবেন না। তা নিয়েই দ্বৈরথ শুরু হয়েছে রাজ্য সরকার এবং বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির মধ্যে। সরকারের নির্দেশ ভাড়া বাড়ানো যাবে না। আর বাসমালিকদের একাংশ আবার জানাচ্ছেন, এত অল্প যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর পরে বাসের রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। যার জেরে আজ, সোমবার থেকে শহরের রাস্তায় সরকারি বাস নামলেও, চলবে না বেসরকারি বাস।

Advertisement

করোনা জাঁকিয়ে বসেছে, এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শহরে গণ পরিবহণ চালু হচ্ছে। এই পরিস্থিতে পরিবহণের যে কোনও মাধ্যমেই প্রয়োজন যাত্রীদের মধ্যে উপযুক্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। ইতিমধ্যে যে কয়েকটি জায়গায় সরকারি বাস চালু হয়েছে, তাতে ওঠা যাত্রীদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা, দীর্ঘদিন পরে মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছেন। তার জেরে অনেক জায়গায় বাসে দেদার ভিড়ও হতে দেখা গিয়েছে। ফলে যাত্রীদেরই অনেকে মনে করেন, বাসভাড়া না বাড়ালে, করোনার আবহে ভিড়ে লাগাম টানা যাবে না। বেসরকারি বাসগুলিও সর্বোচ্চ লাভের আশায় বিধি ভেঙে যত সম্ভব বেশি যাত্রী তুলবে। তাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

সেই আশঙ্কার কথা স্বীকার করে মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘ভাড়া না বাড়ালে বাসে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী তুলতে বাধ্য হবেন বাসকর্মীরা। তাতে করোনা সংক্রমণ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।’’

Advertisement

বাস সংগঠনগুলির হিসেবে, কলকাতায় চলা বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। মিনিবাসের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।

ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘আগে দিনে বাসে প্রায় ৬০০ জন এবং মিনিবাসে প্রায় ৪০০ জন যাত্রী উঠতেন। এখন সেই সংখ্যা প্রতি বাসে মাত্র ২০০ এবং মিনিবাসে ১৫০ জনে নেমে এসেছে। ভাড়া না বাড়ালে সরকার জ্বালানিতে ভর্তুকি দিক। না হলে এত কম যাত্রী নিয়ে বাসের রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব। অর্থাভাবে তাপ্পি মারা টায়ার ব্যবহার করতে হবে। তাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকবে।’’

বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবি না মেনে শনিবার পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নবান্নয় জানিয়েছিলেন, সরকারি বাসের ভাড়া বাড়ছে না।

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বাসভাড়া না বাড়ালে মাত্র কুড়ি জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো অসম্ভব। পরিবহণমন্ত্রী গত ১৩ মে-র বৈঠকে আমাদের বর্ধিত ভাড়ার একটি খসড়া তৈরি করতে বলেছিলেন। ভাড়া বাড়ানোর সেই প্রস্তাবটুকুই আমরা দিয়েছিলাম। সে দিন উনি এক কথা বলেছিলেন। আবার শনিবার নবান্নে উল্টো মন্তব্য করলেন।’’

তবে পরিবহণমন্ত্রী এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘আমি বাস-মিনিবাস সংগঠনের কয়েক জনের কথার উত্তর দেব না। ওঁদের হাতে বাস মালিকেরা নেই। একটাই কথা বলব, মানুষ যাঁরা কাজে বেরোবেন তাঁরা পরিবহণ পাবেন। ১৫টি রুটে আধ ঘণ্টা অন্তর সরকারি বাস চলবে। এক হাজার অ্যাপক্যাবও চলাচল করবে।’’

আরও পড়ুন: বস্ত্র কারবারে ভরাডুবি বাঁচাতে আর্জি বন্দর এলাকার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement