চিনার পার্কের সেই ফ্ল্যাট। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ‘খুনে’র ঘটনায় প্রকাশ্যে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিউ টাউনের যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে সেই ফ্ল্যাট ভাড়া করা আখতারুজ্জামানের নতুন ঠিকানার হদিস পেল সিআইডি। সূত্রের খবর, নিউ টাউন ছাড়া আখতারুজ্জামান চিনার পার্কের এক আবাসনে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। এই মামলায় আখতারুজ্জামানই মূল অভিযুক্ত।
২০১৮ সালে চিনার পার্কের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান। তার পর থেকে বার কয়েক ওই ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করেছেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কসাই জিহাদ হাওলাদারও এই ফ্ল্যাটে ছিলেন বলে সূত্রের খবর।
আনোয়ারুলকে খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বনগাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয় জিহাদকে। পেশায় কসাই জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতায় আনা হয়। মাস দুয়েক আগে কলকাতায় আসেন তিনি। তার পর তাঁকে চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে রাখা হয় বলে সূত্রের খবর। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আখতারুজ্জামানকে এই গত দু’মাসে বার কয়েক ফ্ল্যাটে আসতে দেখেছেন তাঁরা।
ওই আবাসনের কমিটির সদস্য কিঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দিন ১০ আগেও ওই ফ্ল্যাটে কেউ ছিল বলে এখন আবাসনের অনেকেই বলছেন।’’ তবে কারা ছিলেন, তা নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেন না। এই ভাড়া ফ্ল্যাটের কাগজপত্রে (এগ্রিমেন্ট পেপার) যাঁরা সই করেছিলেন, তাঁদের সকলের সঙ্গেই আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সকলের ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
চিনার পার্কের ফ্ল্যাটের কাগজপত্রে দু’জন সাক্ষীর কথা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম পিন্টু দাস। সূত্রের খবর, তিনি আখতারুজ্জামানের গাড়ির চালক। ফ্ল্যাটের গ্যারাজে পার্ক করা আখতারুজ্জামানের ইনোভা গাড়ি চালাতেন পিন্টু। আখতারুজ্জামানকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে আসতেন তিনি। তা ছাড়াও বার কয়েক ফ্ল্যাটে এসেছেন পিন্টু। কেন তিনি ফ্ল্যাটে এসেছেন, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পাশাপাশি, ওই ফ্ল্যাটের পরিচারিকার সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাঁর ফোনও বন্ধ।
কলকাতায় এসে প্রথমে বরাহনগরের বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আনোয়ারুল। সেখান থেকে দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান। মনে করা হচ্ছে, নিউ টাউনের অভিজাত একটি আবাসনে তাঁকে ‘খুন’ করা হয়েছে। যদিও, তাঁর দেহ মেলেনি। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন, আনোয়ারুল খুন হয়েছেন। নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় জিহাদকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
সিআইডি সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করার পর জিহাদকে ভাঙড়ের একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আজিমকে খুনের পর সেখানেই দেহাংশ ফেলা হয়েছে বলে জেরায় উঠে এসেছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেখান থেকে কোনও দেহাংশই মেলেনি। শুক্রবার আবার তাঁকে নিয়ে সেই জায়গায় যাওয়া হয়েছে।