লকডাউন সফল করতে ব্যারিকেড দিয়ে নারকেলডাঙা মেন রোড আটকেছে পুলিশ। তবু তার পাশ দিয়েই কোনও রকমে সাইকেল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা রুজু করার পদ্ধতিতে বদল আনল কলকাতা পুলিশ। এখন থেকে আর লকডাউন বিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ওই আইনে সরাসরি মামলা দায়ের করবে না পুলিশ। তার বদলে আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে থাকা সব তথ্য প্রমাণ-সহ নথি আদালতে জমা দিয়ে বিচারকের কাছে মামলা দায়ের করার অনুমতি চাওয়া হবে। তবে লকডাউন অমান্য করে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরোলে চালকের বিরুদ্ধে মোটরযান আইনে মামলা রুজু করে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে ট্র্যাফিক পুলিশ। পাশাপাশি, লকডাউন নির্দেশ অমান্য করার জন্য ২৬৯ এবং ২৭০ ধারায় মামলা করে গ্রেফতার করা যাবে অভিযুক্তকে। ওই ধারাগুলিতে ইতিমধ্যে থানায় মামলা রুজু হচ্ছে বলে থানা সূত্রের খবর।
লালবাজার সূত্রের খবর, লকডাউন বিধি কার্যকর হওয়ার পর থেকে প্রায় দেড় হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা এবং সরকারি নির্দেশ অমান্য করা আইনে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশকর্মীরা আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করছিল তদন্ত করতে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে। তবে থানা থেকেই জামিন পেতেন অভিযুক্তেরা। শুক্রবার লালবাজারের তরফে থানাগুলিকে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ নিয়ে এ বার থেকে ওই দুই আইনে মামলা রুজু করতে। এতে আইনভঙ্গকরী ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার না হলেও কিংবা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু না হলেও, তাঁর ভোগান্তি বাড়বে বলেই মত পুলিশকর্মীদের একাংশের। পুলিশ মনে করছে, থানার তরফে মামলা রুজু না হলেও, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওঠা সব নথি তথ্য আকারে আদালতে পাঠাতে হবে। আদালত ওই অভিযুক্তকে ডেকে তাঁর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ রয়েছে, তা নোটিস করে জানতে চাইবে এবং প্রয়োজনে থানাকে মামলা করার নির্দেশ দেবে। পুরো পদ্ধতি সময় সাপেক্ষই শুধু নয়, এতে অভিযুক্তকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলেই অনুমান পুলিশের। আবার আদালত থেকেই অভিযুক্তকে জামিন নিতে হবে। ফলে ওই ভোগান্তিতে পড়ার ভয়ে সাধারণ মানুষ লকডাউন বিধি কঠোর ভাবে পালন করবে বলেই মনে করছে লালবাজার।
এক পুলিশকর্তা জানান, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের নিয়ম মেনেই ওই পদ্ধতিতে বদল আনা হয়েছে। লালবাজার আরও জানিয়েছে, লকডাউনে বৈধ অনুমতি ছাড়া গাড়ি নিয়ে বার হওয়ায় বিধিনিষেধ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এত দিন ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্টরা ওই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে অভিযোগ দায়ের করছিলেন। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, এখন থেকে ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার জন্য নির্দিষ্ট মোটরযান আইনে মামলা করতে বলা হয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকেও। তবে প্রয়োজনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা করতে হলে, আইন অমান্যকারীর ছবি তুলে নিয়ম মেনে থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)