প্রতীকী ছবি।
সে তো এল না! দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা। দিন ফুরিয়ে রাত। প্রতীক্ষায় রীতিমতো দিশাহারা অবস্থা। লকডাউনের দিনকালে সরকারি মৎস্য নিগমের অ্যাপে যাঁরা মাছের বরাত দিয়েছেন, তাঁদের এখন এমনই করুণ দশা।
এই অচলাবস্থার পটভূমিতে সমস্যাটা অবশ্য বিচিত্র নয়। লোকাভাবে অনেক বেসরকারি অ্যাপের বরাত মিলতেই তপস্যা করতে হচ্ছে। কিন্তু মৎস্য নিগমের অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে অনেক ক্ষেত্রেই ফোন কেউ ধরছেন না পর্যন্ত। টাকা জমা দিয়ে মাছ না-পেলেও অর্ডার বাতিল করা যাচ্ছে না। এমনই অভিজ্ঞতা রাজর্ষি দত্তের। শনিবার দুপুরের ঘটনা। সল্টলেকের পরিচিত এক বৃদ্ধার জন্য আড় ও বোয়াল মাছ সরবরাহ করতে বলে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন তিনি। আগাম টাকা মিটিয়েও দেন। কিন্তু না-পেয়েছেন মাছ। না-ধরেছেন কেউ ফোন। গড়িয়া থেকে আর এক ব্যক্তিও মধ্য কলকাতায় তাঁর বৃদ্ধা মায়ের জন্য মাছ দিতে বলেছিলেন। টাকা খসেছে। কিন্তু মাছের ‘ম’-ও জোটেনি। বাগমারির এক ব্যক্তি অবশ্য মাছ পেলে টাকা মেটানোর শর্তে বরাত দেন। তাঁর মাছও এসে পৌঁছয়নি। বাস্তবিক এর বাইরেও মাছ না-পাওয়ার বা টাকা ফেরত না-পাওয়ার অভিজ্ঞতা ভূরি ভূরি।
বুধবার রাজর্ষি বলেন, ‘‘অ্যাপের অর্ডার বহু চেষ্টা করেও বাতিল করা যায়নি। ওয়েবসাইটের নম্বরগুলিও চার দিনে কেউ ধরেননি। অসহায় অবস্থা। ওয়েবসাইটে ক্ষুব্ধ মতামত জানিয়েও কোনও তাপ-উত্তাপ নেই।’’
তবে এই পরিস্থিতির জন্য মৎস্য নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত মুখোপাধ্যায় দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আগে যেখানে ৫০টি বরাত আসত, লকডাউনের পরে সেখানে রোজ এক হাজার অর্ডার আসছে। অথচ, কর্মী এখন আগের অর্ধেকও নেই।’’ সুব্রত জানিয়েছেন, অ্যাপে যে খাবার সরবরাহকারী যুবকদের নম্বর রয়েছে, তাঁরা অস্থায়ী কর্মী। হয় তাঁরা ব্যস্ত, নয়তো এখন কাজ করছেন না। তাতে অবশ্য সাধারণ নাগরিকের সমস্যা লঘু হয় না। তবে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি আরও জানিয়েছেন, খাবার সরবরাহের বেসরকারি অ্যাপগুলির সঙ্গে তাঁরা শীঘ্রই গাঁটছড়া বাঁধছেন। সেটা হলে মাছ পৌঁছতে সমস্যা হবে না। আগের বকেয়া বরাতেরও দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।