যুদ্ধকালীন: রঙের কারখানার আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। রবিবার, মুরারিপুকুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রঙের কারখানায় আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়াল। রবিবার সকালে, মানিকতলা থানার মুরারিপুকুর এলাকায়। দমকলকর্মীরা ঘণ্টাদুয়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ভস্মীভূত হয়ে যায় কারখানাটি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের দু’টি বাড়িও। তবে ঘিঞ্জি এলাকার ভিতরে কী ভাবে দিনের পর দিন রঙের কারখানা চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ১৬ নম্বর মুরারিপুকুর এলাকায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে আসে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। যদিও তার আগেই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয়েরা। প্রাথমিক ভাবে পাশের একটি ট্যাঙ্ক থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। আগুন যাতে না ছড়ায়, সে জন্য আশপাশের বাড়ির জিনিস সরানোও শুরু হয়। এর পরে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
তবে রাসায়নিক ও দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানায়। পাশের তেতলা বাড়ির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘরের জানলা, আসবাবপত্র, জামাকাপড়, দরকারি কাগজপত্র পুড়ে যায়। এমনকি, তিনটি মোটরবাইক পুড়ে গিয়েছে বলেও বাড়ির মালিকের দাবি। হরিশঙ্কর পাল নামে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘কিছু দিন পরে বাড়িতে অনুষ্ঠান রয়েছে। কিছু দরকারি কাগজপত্র বার করে আনতেই পারিনি। সব শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘প্রথমে কারখানার এক কোণ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে দ্রুত পাড়ায় খবর দিতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি দাউ দাউ করে জ্বলছে কারখানা।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ১০-১২ বছর ধরে এলাকায় এই কারখানাটি চলছিল। কিন্তু কোনও রকম অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সেখানে ছিল না বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় বেআইনি ভাবে ওই কারখানা চলার অভিযোগও করেছেন তাঁরা। বাসিন্দা দেবারানি পাল বলেন, ‘‘বার বার কারখানা সরানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরানো হয়নি।’’ যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার কাছে কোনও দিন এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ। তার মধ্যেই গুদাম করে রঙের সামগ্রী রাখা হত।’’ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে প্রাথমিক ভাবে এই কারখানায় অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে অনুমান। আগুন লাগার কারণ জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে।