বিধাননগর কমিশনারেটকে দেওয়া সেই অভিযোগপত্র।
জমির মালিকানা কার— তা নিয়ে মামলা চলছে। সেই জমিতে বর্তমানে যাঁরা রয়েছেন, মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তাঁদের উচ্ছেদ করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বসবাসকারীদের অভিযোগ, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার হাতিয়াড়ার বাসিন্দা রতন মৃধা নামে ওই ব্যক্তি গত সোমবার দলবল নিয়ে তাঁদের জায়গা ছাড়ার জন্য হুমকি দেন। তাঁদের পরিবারের দু’জনকে নিউ টাউন থানার পুলিশকে দিয়ে হেনস্থা করেন। বাড়ির দু’জনকে পুলিশ এক বেলা থানার লক-আপে আটকে রাখে বলেও অভিযোগ করেছে পরিবারটি। লিখিত আকারে পাঠানো তাঁদের অভিযোগপত্রটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করতে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কাছে আবেদন জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। রতন অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, হাতিয়াড়ার সুভাষপল্লির বাসিন্দা ধ্রুব মণ্ডল অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর দুই ভাই প্রকাশ ও বিকাশ সেখানে দু’কাঠা দু’ছটাক জমি কিনে ২০১০ সাল থেকে রয়েছেন। ২০১৪ সালে এক ব্যক্তি জমিটি তাঁর বলে দাবি করেন এবং ধ্রুবদের জমি ছেড়ে দিতে বলেন। ধ্রুবর কথায়, ‘‘জমির মালিকানা নিয়ে বারাসত আদালতে মামলা চলছে। ইতিমধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রতন প্রায় ৪০ জনকে নিয়ে বাড়িতে চড়াও হন এবং বাড়ি খালি করে দিতে বলেন। পুলিশ ডেকে গ্রেফতারির হুঁশিয়ারিও দেন।’’ প্রকাশের দাবি, ‘‘জমি আমাদের। সব নথিপত্র রয়েছে। বারবার রতনরা হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রশাসন ওঁদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।’’
পরিবারটির আরও অভিযোগ, রতনের লোকজন তাঁদের বাড়ির মহিলাদের গালিগালাজ করেন। গোলমালের ভিডিয়ো তুলতে দেখে ধ্রুবর ছেলের মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়। এর পরে রতন ফোন করেন থানায়। পুলিশ ধ্রুব ও তাঁর এক ভাইকে নিয়ে গিয়ে লক-আপে আটকে রাখে বলেও অভিযোগ ওই পরিবারের।
যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত রতন এ দিন ফোনে দাবি করেন, ওই পরিবারটি জাল কাগজপত্র তৈরি করে দালালদের মাধ্যমে অন্যের জমিতে থাকছেন। তিনি বলেন, ‘‘দু’টি মামলা চলছে। জমির নথি জাল করার অভিযোগে পুলিশ আগে ওঁদের গ্রেফতার করেছিল। আমিই তখন ওঁদের ছাড়াতে উদ্যোগী হই। ওই এলাকায় দালাল-চক্রের মাধ্যমে অনেকের জমি বেহাত হয়ে গিয়েছে। আমি সে সব আটকানোর চেষ্টা করছি।’’
কিন্তু আদালত তো রয়েছে? রতনের জবাব, ‘‘শুধু আমি নই। এলাকার আরও অনেকেই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। জমিটি একাধিক বার মাপা হয়েছে। পুলিশের কাছেও সব কাগজ জমা দেওয়া আছে। অভিযোগকারীরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে বিধাননগর পুলিশের ডিসি (সদর) কুণাল আগরওয়ালকে ফোন করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’