প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন সাজা দিল আদালত। শুক্রবার শিয়ালদহ ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক লীলাময় মণ্ডল মহম্মদ পারভেজ নামে ওই ব্যক্তিকে এই সাজা দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন।
সরকারি কৌঁসুলি উত্তম চক্রবর্তী জানান, ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর রাতে তপসিয়া থানা এলাকার অবিনাশ চৌধুরী লেনের কিছু বাসিন্দা আয়েষা বেগম নামে এক মহিলাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রাস্তায় ছুটতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অবশ্য আয়েষাকে হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁরা।
তপসিয়া থানার তৎকালীন সাব ইনস্পেক্টর (বর্তমানে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের ইনস্পেক্টর) জয়দীপ দাস তদন্তে নেমে জানতে পারেন, রাত পৌনে দশটা নাগাদ পারভেজ নেশা করে বাড়িতে ঢুকে আয়েষার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এক সময়ে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় সে। ঘরে সেই সময়ে ছিল আয়েষার সাত বছরের মেয়ে সিব্রা। আয়েষা জ্বলন্ত অবস্থায় কোনও রকমে দরজার ছিটকিনি খুলে বাইরে বেরিয়ে পড়েন। ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় পারভেজকে।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসার জানান, সিব্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, স্ত্রীকে পুড়তে দেখেও পারভেজ ঘরের বিছানায় বসেছিল। স্ত্রীকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টাই করেনি সে। ঘটনার সাত দিন পরে, ১১ নভেম্বর হাসপাতালে মৃত্যু হয় আয়েষার। তার আগে দু’টি জবানবন্দি দিয়েছিলেন তিনি। একটি তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাসপাতালের চিকিৎসকের উপস্থিতিতে। অন্যটি আদালতের নির্দেশে এক জন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। মৃত্যুকালীন দু’টি জবানবন্দিতেই আয়েষা জানিয়ে যান, পারভেজ তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢালার পরে জ্বলন্ত দেশলাই কাঠি ছুড়ে দেয়। সরকারি কৌঁসুলি জানান, সিব্রাও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়ে জানায়, চোখের সামনে সে দেখেছে, মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বাবা।
জেলবন্দি অবস্থাতেই বিচার চলে পারভেজের। এই মামলায় সাক্ষ্য দেন ২৬ জন।