রাস্তা এবং মোড়গুলির মেরামতির জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুরসভা, পূর্ত দফতর, কেএমডিএ এবং কলকাতা বন্দরকে। ফাইল ছবি
দুর্গাপুজোর বাকি এক মাসের কিছু বেশি সময়। আগামী সোমবার শহরের পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে সমন্বয় বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ, দমকল, পূর্ত দফতর, কেএমডিএ-র মতো সংস্থা, যারা পুজোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত, তাদের আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন ওই বৈঠকে। আর এরই মধ্যে পুলিশের চিন্তা বাড়াচ্ছে শহরের বেশ কিছু রাস্তার বেহাল দশা। তাই পুজোর প্রাক্কালে ওই সব রাস্তার অবস্থা ফেরাতে এবং দর্শনার্থীদের কথা মাথায় রেখে সমস্ত রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার জন্য এ বার পুরসভা, পূর্ত দফতর, কেএমডিএ এবং কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিল লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, ছোট-বড় রাস্তা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় মিলিয়ে শহরের ১১৭টি রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলির অবস্থা ভাল নয়। লালবাজারের কর্তাদের আশঙ্কা, ওই সব রাস্তার মেরামতির কাজে অবিলম্বে হাত না দিলে তা পুজোর সময়ে যান চলাচল কিংবা দর্শনার্থীদের মসৃণ যাতায়াতের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সেই কারণে রাস্তা এবং মোড়গুলির মেরামতির জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুরসভা, পূর্ত দফতর, কেএমডিএ এবং কলকাতা বন্দরকে। বৃহস্পতিবারই লালবাজারের তরফে রাস্তার নাম সংবলিত চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে। একই সঙ্গে কোন কোন রাস্তায় আলোর প্রয়োজন, দেওয়া হয়েছে সেই তালিকাও। যাতে রয়েছে ময়দান এলাকা-সহ চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ।
লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক আধিকারিক জানান, শহরের রাস্তাগুলির হাল-হকিকত সব চেয়ে ভাল জানে ট্র্যাফিক গার্ডগুলি। তাই চলতি মাসের গোড়ায় তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাদের অধীনস্থ এলাকায় কোন রাস্তার অবস্থা কেমন। সেই তথ্য পাওয়ার পরেই বেহাল রাস্তা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট সব দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ১১৭টি রাস্তার কয়েকশো জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে মেরামতির জন্য। নাম রয়েছে বেশ কয়েকটি উড়ালপুলেরও।
পুলিশ জানিয়েছে, শহরের বেশ কিছু রাস্তার অবস্থা তুলনামূলক ভাবে বেশি খারাপ। যার মধ্যে রয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, দেশপ্রাণ শাসমল রোড, জেমস লং সরণি এবং বন্দর এলাকার কিছু রাস্তা। ভাল অবস্থায় নেই ডায়মন্ড হারবার রোডের কিছু অংশ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ এবং ইএম বাইপাসের একাংশ। বিবেকানন্দ রোড, রবীন্দ্র সরণি, এ পি সি রোড, কিংস ওয়ে, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মতো কিছু রাস্তায় আবার জায়গায় জায়গায় গর্ত রয়েছে, অথবা পুরো মেরামতির প্রয়োজন রয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, বেহালা-ঠাকুরপুকুর এলাকার জেমস লং সরণি, বীরেন রায় রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তার সামগ্রিক মেরামতি প্রয়োজন। এই তালিকায় গড়িয়াহাট এবং শিয়ালদহ উড়ালপুলও রয়েছে।
পুলিশের দাবি, আগামী সপ্তাহ থেকেই পুজোর কেনাকাটার ভিড় শুরু হয়ে যাবে শহর জুড়ে। বাইরে থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে এবং বড়বাজার এলাকায় প্রচুর গাড়ি ঢুকবে। পুজোর আগে বাড়তি গাড়ির চাপ সামাল দেওয়ার জন্য রাস্তা সংস্কার জরুরি। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পিচের আস্তরণ তুলে ফেলে নতুন করে তা তৈরির কাজ করছে কলকাতা পুরসভা। তাই আশা করা যাচ্ছে, পুজোর আগেই দ্রুততার সঙ্গে গর্ত সারাই থেকে শুরু করে খানাখন্দে ভরা রাস্তা মেরামতির সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে।