হাই কোর্ট প্রাঙ্গণে মারামারি আইনজীবীদের। ফাইল ছবি।
ঘটনাস্থল কলকাতা হাই কোর্ট। এজলাসে চলছে হাঁসখালি ধর্ষণ নিয়ে মামলা। তার মধ্যেই আদালতের বাইরে তৈরি হল হুলস্থুল পরিস্থিতি। হাই কোর্টের এক বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা নিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের শাসক ও বিরোধী গোষ্ঠীর আইনজীবীরা জড়ালেন মারামারিতে। এমনকি এক জন আইনজীবী অন্য জনের হাতে কামড়ও বসান বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে ছুটতে হল আইনজীবী কল্লোল বসুকে।
মঙ্গলবার বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা হাই কোর্টের এক বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করাতে চাইলে তাতে অমত প্রকাশ করেন সংগঠনের বিরোধী সভাপতি আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তা নিয়ে প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা, তার পর হাতাহাতিতে জড়ালেন দু’পক্ষের আইনজীবীরা। প্রবল হট্টগোলের মধ্যে আইনজীবী কল্লোল বসু ছোটেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে। তাঁকে গিয়ে আবেদন করে জানান, আদালত প্রাঙ্গণে নজিরবিহীন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। আরও পুলিশ মোতায়েন করার জন্য প্রধান বিচারপতিকে আবেদন করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি থামতে বলেন তাঁদের। জানান একটি গুরুত্ব মামলার শুনানি চলছে। যদিও বাইরে তখন আইনজীবীদের মধ্যে বচসা চলছে। প্রধান বিচারপতি শান্ত হওয়ার কথা বলেন। তার পর বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে আইনজীবী পি চিদম্বরম রয়েছেন। ৫ মিনিট পর আমরা আসছি।’’
উল্লেখ্য, ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন বার কাউন্সিলের সভাপতি তথা বিধায়ক অশোককুমার দে। একাধিক মামলায় বিচারপতির বেশ কিছু মন্তব্যের সমালোচনা করতে শোনা গিয়েছে আইনজীবীদের একাংশকে। মঙ্গলবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে আইনজীবী তথা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট এক জন বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করার চেষ্টা চলছে।’’ তিনি নিজেও আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী এই ঘটনার সমালোচনা করে বলেন, ‘‘হাই কোর্ট পরিসরে স্বনামধন্য আইনজীবী অরুণাভবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের উপর তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডাদের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করছি। আগামিদিনে হয়তো হাই কোর্টের বিচারপতিদের উপরও হামলা হবে। নৈরাজ্যের রাজ্য বাংলার এ এক নতুন অবদান!’’