ফাইল ছবি।
নদিয়ার হাঁসখালিতে এক নাবালিকার গণধর্ষণ এবং খুনের মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ বার তাঁর ওই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। ২০১২-য় দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার হন নির্ভয়া। বেশ কিছু দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন। তার পর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আশাদেবীর মতে, মমতা অত্যন্ত ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য করেছেন। এক জন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমন মন্তব্য যে প্রত্যাশিত নয়, সে বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
গত ৫ এপ্রিল নদিয়ার হাঁসখালি থানার শ্যামনগরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দু গোয়ালির ছেলে সোহেলের বিরুদ্ধে। তীব্র যন্ত্রণা এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে পরে ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়। প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকার দেহ ‘জোর করে’ শ্মশানে দাহ করে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাঁসখালির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আপনি রেপ বলবেন, না কি প্রেগনেন্ট বলবেন, না কি লভ অ্যাফেয়ার বলবেন... না কি শরীরটা খারাপ ছিল, না কি কেউ ধরে মেরেছে... আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটা কী? ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। মেয়েটার নাকি লভ অ্যাফেয়ার ছিল শুনেছি।’’ এ বার এই প্রেক্ষিতেই মমতার সমালোচনা শোনা গেল আশার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘তিনি যদি নির্যাতিতা সম্পর্কে এই ধরনের মনোভাব পোষণ করেন, তা হলে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয়। এক জন মহিলা হিসেবে তিনি এই ধরনের মন্তব্য করলে তা ওঁর পদের সঙ্গে মানানসই হয় না।’’
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ২০১২-য় পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণের ঘটনাকে মমতা ‘ছোট ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যদিও কলকাতা পুলিশের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। গোয়েন্দা প্রধানের পদ থেকে সরতে হয় দময়ন্তীকে। ঘটনাচক্রে, সেই ঘটনার এক দশক পর, মঙ্গলবারই রাজ্যে ঘটে যাওয়া চারটি ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে নজরদারির দায়িত্ব কলকাতা হাই কোর্ট তুলে দিয়েছে সেই দময়ন্তীর হাতেই। তবে চারটি ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে নেই হাঁসখালি।