—প্রতীকী চিত্র।
উৎসবের শহরে সকাল থেকে রাস্তায় বেরিয়ে ইচ্ছেমতো ট্র্যাফিক বিধি ভাঙার ‘রোগ’ বহু পুরনো। প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসেও পথের বিধি ভাঙা বন্ধ হয় না। শহর জুড়ে চলা পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহে এই বিধি ভাঙা আটকাতে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দিল লালবাজার। কিন্তু রাস্তায় নেমে কঠোর হাতে না সামলালে বিধি ভাঙা কি আদৌ আটকানো যাবে? প্রশ্নটা থাকছেই।
বর্তমানে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে শহর জুড়ে পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে নানা ধরনের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে গোটা সপ্তাহ জুড়ে। মূলত শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং পথের বিধি ভাঙার প্রবণতা কমাতে সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে। এর পাশাপাশি, রাস্তায় নেমে উৎসবের নামে বিধি ভাঙা আটকাতেও কড়া হচ্ছে লালবাজার। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিটি গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা। এর জন্য রাস্তায় অতিরিক্ত নজরদারি চালানোর কথাও বলা হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, ২৩ জানুয়ারি রাত থেকে রাস্তায় বিশেষ অভিযান চলছে। ২৪ তারিখেও চলেছে। ওই দুই রাতে পথের বিধি ভাঙায় ৫৩৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২৭ জন বিনা হেলমেটের ও ৯৯ জন মত্ত চালক রয়েছেন।
সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক বিধি ভাঙা আটকাতে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের গা-ছাড়া মনোভাবে এ বার বদল আনতে চাইছে লালবাজার। লালবাজারের এক কর্তা জানান, বছরভর একাধিক উৎসবে রাস্তায় থাকা পুলিশকর্মীদের অনেকের মধ্যেই কর্তব্য পালনে ঢিলেমি দেখা যায়। যার জেরে বিধি ভাঙার প্রবণতা বাড়ে। প্রজাতন্ত্র দিবসে রাস্তায় গাড়ির দৌরাত্ম্য রুখতে অতিরিক্ত কর্মীদের নামাচ্ছে পুলিশ। শহর জুড়ে প্রায় ১০০টি জায়গায় নাকা-তল্লাশি করা হবে বলে খবর। বড় রাস্তার পাশাপাশি ছোট রাস্তাতেও দিনভর নজরদারির জন্য প্রতিটি গার্ডে বিশেষ দল রাখা হবে। যে কোনও উৎসবের দিনেই দু’চাকার যান বাড়তি মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে লালবাজারের। পুলিশ সতর্ক হলেও প্রজাতন্ত্র দিবসে তাদের আটকানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।
লালবাজারের নির্দেশের পরেও নিচুতলার কর্মীদের একাংশের মনোভাব বদলাবে কি না, প্রশ্ন থাকছে তা নিয়েও। ইএম বাইপাসে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘উঁচুতলা থেকে শুধু নির্দেশ দিলেই তো হবে না। এটাও বুঝতে হবে যে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সব সময়ে বেপরোয়া গাড়ির সামনে দাঁড়ানো যায় না। সব দিক রক্ষা করে যতটা করা যায়, সেই চেষ্টা করব।’’ লালবাজারের এক কর্তা যদিও বিধি ভাঙা আটকানোর বিষয়ে আশাবাদী। তাঁর কথায়, ‘‘সপ্তাহভর পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ পালনের মাধ্যমে চালক ও পথচারীদের সচেতন করার প্রয়াস চলছে। নজরদারির জন্য গার্ডগুলিকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নজরদারি ঠিক মতো হচ্ছে কি না, পদস্থ আধিকারিকেরা তা খতিয়ে দেখবেন।’’