লালবাজার ফাইল চিত্র।
লালগড় থানার মালখানা থেকে ‘উবে’ গিয়েছিল বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। কলকাতা পুলিশ এলাকায় এখনও তেমন অভিযোগ নেই। তবে আগামী দিনে যাতে বাজেয়াপ্ত হওয়া জিনিস ও টাকা মালখানা থেকে উধাও হওয়ার ঘটনা বা কোনও অনিয়ম না ঘটে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে লালবাজার।
কী সেই বিশেষ ব্যবস্থা? লালবাজারে বসে এক ক্লিকেই পুলিশ কমিশনার-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা জানতে পারবেন, কোন থানার মালখানায় কী আছে, অথবা কোন মামলার সূত্রে মালখানায় কী জিনিস বাজেয়াপ্ত হয়ে জমা পড়েছে। এবং সে সবের বর্তমান অবস্থা কী? সূত্রের খবর, আগামী মাসের মধ্যেই ওই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে লালবাজার। নতুন ব্যবস্থার স্বার্থে থানার মালখানার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
কোনও মামলার সূত্রে বাজেয়াপ্ত হওয়া সামগ্রী অথবা পুলিশের উদ্ধার করা টাকা, অস্ত্র বা অন্য কোনও জিনিস থানার যেখানে রাখা হয়, তাকেই মালখানা বলে। এর দেখভালের দায়িত্ব থাকে থানারই এক পুলিশকর্মীর উপরে। তাঁর অধীনেই ওই জিনিসপত্র জমা হয়। প্রতিটি থানাতেই দীর্ঘদিন ধরে বাজেয়াপ্ত হওয়া বা উদ্ধার হওয়া সামগ্রী জমে রয়েছে। অতএব এক-একটি থানার মালখানায় কম করে কয়েক লক্ষ টাকার মালপত্র ও টাকা জমা রয়েছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে থানাগুলির মালখানা যাতে পরিষ্কার থাকে, তার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
এর পরেই মালখানা নিয়ে নতুন কার্যবিধি চালু করার চেষ্টা শুরু করেছে লালবাজার। এর জন্য মালখানার জিনিসগুলির উপরে বার কোড বা কিউআর কোড বসানো হচ্ছে। যা একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে নথিভুক্ত থাকবে। কোন মামলার সূত্রে তা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, ওই বাজেয়াপ্ত সামগ্রী নিয়ে আদালতের নির্দেশ— সব তথ্যই থাকবে তাতে। এক পুলিশকর্তা জানান, এর ফলে মালখানা থেকে কেউ জিনিস সরাতে পারবেন না। উচ্চপদস্থ কর্তারা অনলাইনে নির্দিষ্ট থানার মালখানা পরীক্ষাও করতে পারবেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, আদালতে চলা মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত জিনিস ছাড়া অন্য সামগ্রী মালখানায় রাখা যাবে না বলে নির্দেশ জারি হয়েছে। পরে সেগুলিকে কিউআর কোড বা বার কোড দিয়ে নথিভুক্ত করে লালবাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। লালবাজার সূত্রের খবর, বর্তমান পুলিশ কমিশনার দায়িত্ব নিয়েই সব থানার ওসিদের সঙ্গে প্রতিটি ভার্চুয়াল বৈঠকেই মালখানার প্রসঙ্গ তুলেছেন। মালখানা নিয়ে কী করা যায়, সেই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন আধিকারিকদের কাছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, কমিশনার চাইছেন, প্রতিটি থানার মালখানা যাতে ‘আপ টু ডেট’ থাকে। তার জন্যই থানার পুরনো নথি যাতে অন্য কোথাও যাতে রাখা যায়, সেই চিন্তাভাবনাও হচ্ছে। থানার বাইরে থাকা মালখানায় জমা বাইক বা গাড়ি মালিকের হাতে তুলে দিতে থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।