লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসে যাতে কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য শহরকে
নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আনতে উদ্যোগী হয়েছে লালবাজার। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান যেখানে হবে, সেই রেড রোডের জন্য থাকছে বাড়তি ব্যবস্থা। ওই এলাকায় অতিরিক্ত দু’হাজার পুলিশকর্মী রাখা হচ্ছে। কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে দিন দুই আগেই রাস্তায় বাড়তি বাহিনী নামাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই শহরের হোটেল এবং অতিথিশালাগুলির উপরে
নজরদারি চালানোর পাশাপাশি শহরে ঢোকার বিভিন্ন রাস্তায় বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে পুলিশের তরফে। ধর্মতলা, নিউ মার্কেট, ক্যামাক স্ট্রিট চত্বরের একাধিক হোটেল-সহ শহরের যে সমস্ত এলাকায় ভিন্ রাজ্য এবং বিদেশ থেকে আসা লোকজন থাকেন, সে দিকে নজর রাখছে লালবাজার। ইতিমধ্যেই প্রতিটি থানাকে বলা হয়েছে, ওই সমস্ত হোটেলে আবাসিকেরা কবে আসছেন, কত দিনের জন্য আসছেন, কেন আসছেন— তা খতিয়ে দেখতে হবে। শনিবার থেকেই বিভিন্ন থানা এলাকার একাধিক হোটেলে ঢুকে রেজিস্টার খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া, শহরের বিভিন্ন শপিং মল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থানে পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেট্রো স্টেশন ও ফেরিঘাটগুলিতেও রাখা হচ্ছে বাড়তি পুলিশি ব্যবস্থা। শহরে
ঢোকার বিভিন্ন জায়গাতেও বাড়তি পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা থাকছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, শহরের প্রায় একশোটিরও বেশি জায়গায় নাকা তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। শনিবার রাত থেকেই তা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যে হেতু স্বাধীনতা দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি রেড রোডে হবে, তার জন্য সেখানে একাধিক
ভিভিআইপি উপস্থিত থাকবেন। সেই কারণে ওই এলাকার জন্য থাকছে বাড়তি সতর্কতা। যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার এক আধিকারিক রেড রোডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ইতিমধ্যেই ছ’টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে এই এলাকায়। এ ছাড়া, থাকছে চারটি স্যান্ড ব্যাগ মোর্চা, ১১টি স্যান্ড ব্যাগ বাঙ্কার এবং ছ’টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। গোটা রেড রোডকে ১৩টি জ়োনে ভাগ করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে ৮৬টি সেক্টর। প্রতি জ়োনেই এক জন করে ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক দায়িত্বে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, থাকবেন ৮৬ জন সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার কর্তা। সেই সঙ্গে শুধুমাত্র রেড রোড এলাকার জন্য অতিরিক্ত দু’হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন রাখা হচ্ছে।
এ সবের পাশাপাশি একশোর বেশি সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে গোটা রেড রোড চত্বরে। এ ছাড়া, কুইক রেসপন্স টিম থেকে শুরু করে উইনার্স বাহিনীকেও তৈরি রাখা হচ্ছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিরাপত্তার সমস্ত বন্দোবস্ত থাকছে। কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না। বাকি শহরেও কড়া নজরদারি থাকছে।’’