গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নবান্নের নির্দেশে কলকাতা পুলিশে কর্মরত সমস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের সম্পর্কে জোড়া তথ্য তলব করল লালবাজার। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের সম্পর্কে মূলত দু’টি তথ্য জানাতে হবে— এক, অতীতে তাঁদের কোনও অপরাধের নজির আছে কি না, দুই, তাঁদের চারিত্রিক কোনও দোষ রয়েছে কি না। পুরুষ-মহিলা— উভয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। হোমগার্ড সম্পর্কেও খোঁজ খবর করে তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ধরা পড়েছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অনেকেই মনে করছেন, কলকাতা পুলিশে অধীনে কর্মরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের গ্রেফতারির ঘটনায় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, তেমনই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর। তড়িঘড়ি কলকাতার সব থানাকে তাদের অধীনে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সদর দফতরে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে তাদের কাজের মূল্যায়নও তুলে ধরতে হবে রিপোর্টে।
পাশাপাশি, প্রত্যেক সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম ঠিকানা-সহ যাবতীয় পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি যাচাই করে পাঠাতে হবে। সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজে যোগদান করার পর তার পারফরম্যান্স কেমন, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে বলেই কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করতে গিয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠেছে কি না, সেই তথ্য জানাতে হবে ওই রিপোর্টে। এমনকি ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কোনও নেশা করেন কি না, তা-ও রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে। প্রসঙ্গত, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে নেশা করার অভিযোগ ওঠায় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। নবান্নের নির্দেশে তাই এ বার সিভিক ভলান্টিয়ারদের যাবতীয় তথ্য নিজেদের হাতে পেতে চাইছে লালবাজার।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় এমনিতেই অস্বস্তিতে কলকাতা পুলিশ। যে ভাবে জনমানসের ক্ষোভ রাজপথে নেমে এসেছে, তাতে কলকাতা পুলিশের ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের কাছে। এ ক্ষেত্রে তাই নবান্নের নির্দেশ আসার পরেই আর কালবিলম্ব না করে তড়িঘড়ি সিভিক ভলান্টিয়ারদের তথ্য তলব করেছে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর। তবে এই তথ্য তলবের বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ কলকাতা পুলিশ।