প্রতীকী ছবি।
দাদার মৃতদেহ আগলে রেখে ছিলেন বোন। আশপাশের বাসিন্দাদের থেকে দুর্গন্ধ বেরোনোর অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে এক প্রৌঢ়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, প্রায় ১০ দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার নরেন্দ্রপুরের একটি আবাসনে। মৃতের নাম অঞ্জন দে (৬৫)।
আবাসন সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বি-ব্লকের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরোনোয় আবাসিকেরা সোনারপুর থানায় খবর দেন। তদন্তকারীরা জানান, আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কয়েক বার বেল বাজানোর পরে এক মহিলা ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দেন। ঢুকে দেখা যায়, হাফ প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় এক ব্যক্তি খাটের পাশে মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। মৃতদেহটিতে পচন ধরে গিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে মৃতের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাই অঞ্জনবাবুর বোন মিনতি দে। এ দিন প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধারের পরে মিনতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বিড়বিড় করে বলেন, ‘‘বডি নিয়ে যান।’’ তদন্তকারীরা জানান, অঞ্জনবাবুর দেহ নিয়ে যাওয়ার পরেই ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন মিনতি। অনেক ডাকাডাকির পরে বিকেলে দরজা খুললে তাঁকে হোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
অঞ্জনবাবুর প্রতিবেশী আবাসিকেরা জানান, ফ্ল্যাট কেনার সময়ে ওই প্রৌঢ় নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়েছিলেন। ভাই-বোন প্রায় ১০ বছর ধরে সেখানে রয়েছেন। তবে তাঁরা কারও সঙ্গে কথা বলতেন না বলেই দাবি প্রতিবেশীদের। এমনকি আবাসন রক্ষণাবেক্ষণের বহু টাকা বকেয়া বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে অঞ্জনবাবুর গাড়ি চালাতেন এক ব্যক্তি। তাঁরা বাইরে গেলে ওই চালককে ফোনে ডেকে নিতেন। চালককে জেরা করা হলে তিনি জানান, দিন পনেরো আগে তাঁকে ফোন করেছিলেন অঞ্জনবাবু। ওই দিন তিনি আসতে পারবেন না বলে জানিয়েও দিয়েছিলেন। তার পর আর ফোন আসেনি।
বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। মিনতিকে হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই মনে হচ্ছে।’’ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।