Teachers

Lack of English Teacher: বাড়ছে আগ্রহ, তবু ইংরেজিতে পড়ানোর শিক্ষক নেই বহু স্কুলে

অধিকাংশ সরকারি স্কুলেই ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষক নেই। কোথাও আবার থাকলেও তার সংখ্যা খুবই কম।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৭:৫৭
Share:

শিক্ষকের সংখ্যা কম ফাইল চিত্র

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ সরকারি স্কুলেই ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষক নেই। কোথাও আবার থাকলেও তার সংখ্যা খুবই কম। ফলে সরকারি স্কুলের ইংরেজি বিভাগে ছাত্র সংখ্যা ক্রমশ কমছে।

Advertisement

অথচ শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষত করোনাকালে উপার্জন কমে যাওয়ায় গত দেড় বছরে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম থেকে সরিয়ে এনে সরকারি স্কুলের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগে সন্তানদের পড়ানো যায় কি না, তার খোঁজখবর নিয়েছেন অনেক অভিভাবক। তাই সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা মনে করছেন, এই সব সরকারি স্কুলে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করে ইংরেজি মাধ্যম চালু হলে সেখানে পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়বে।

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানান, তাঁদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম রয়েছে ঠিকই, কিন্তু অনেক ক্লাসই ইংরেজির বদলে বাংলায় পড়ানো হয়। কারণ, পর্যাপ্ত ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষিকা নেই। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা মাধ্যমের শিক্ষিকা কী ভাবে ইংরেজিতে পড়াবেন? তা ছাড়া ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদেরও কিন্তু প্রথম ভাষা হিসেবে বাংলা পড়তেই হয়। যা তাদের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন। আইসিএসই বা সিবিএসই থেকে পড়ুয়া এলে তাদের এ ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। তা সত্ত্বেও যারা ওই দুই বোর্ড থেকে এসে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, তাদের এই অসুবিধার বিষয়গুলি আগেই জানিয়ে রাখি।”

Advertisement

সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহ মহাপাত্র জানান, তাঁদের স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার শিক্ষিকা থাকলেও অঙ্কের শিক্ষিকা নেই। তিনি বলেন, “বাংলা মাধ্যমের শিক্ষিকারাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়ান। ইংরেজি মাধ্যমে পর্যাপ্ত শিক্ষিকা থাকলে পরিকাঠামো ভাল হত। তা হলে অনেক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়ার এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ বাড়ত।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, করোনাকালে গত দেড় বছরে বেশ কিছু অভিভাবক তাঁদের স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানদের পড়ানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাপিয়াদেবীর কথায়, “বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে মাসিক বেতন হিসেবে যত টাকা দিতে হয়, তা আমাদের স্কুলে সারা বছরের বেতনের চেয়েও বেশি। তাই অতিমারি পরিস্থিতিতে আর্থিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়া অনেক পরিবারই আমাদের মতো বাংলা মাধ্যমের স্কুলের ইংরেজি বিভাগে সন্তানদের পড়াতে চাইছে।”

প্রায় একই অভিজ্ঞতা উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের শিক্ষক তথা ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুরও। তবে তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম থাকলেও সেখানে পড়ানোর মতো এক জন শিক্ষকও নেই। তা হলে এখানে কেন ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়ারা ভর্তি হবে?” অথচ দেখা গিয়েছে, গত বছরে বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ার জন্য রীতিমতো আগ্রহী ছিল বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়ারা। বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠনের তরফে সুপ্রিয় ভট্টাচার্যও মনে করেন, সরকারি স্কুলগুলির ইংরেজি মাধ্যমের পরিকাঠামো উন্নত হলে অনেকেই সেখানে সন্তানদের ভর্তি করতে চাইবেন। তিনি বলছেন, “বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। তাই অনেকেই বাংলা মাধ্যম স্কুলের ইংরেজি বিভাগে ছেলেমেয়েদের পড়াতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement