সাত বছরের কিশোরীর চিৎকার শুনে ছুটে গিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। গিয়ে তাঁরা দেখেন, ঘরের দরজা খোলা। ভিতরে পড়ে রয়েছেন কিশোরীর মা। ঘর থেকে উধাও কিশোরীর বাবা। প্রতিবেশীরাই ওই মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম নাসিমা বিবি (৩০)। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে, পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার ব্রুক লেনে, সিডিএলবি কোয়ার্টার্সের ই ব্লকের চার তলায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, নাসিমার স্বামীর নাম মহম্মদ সোহেল রানা ওরফে রিপন আলি শরিফ। সে পেশায় ঠিকা শ্রমিক। মৃতার দিদি সারিফা বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ খুন এবং বধূ নির্যাতন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনার দিন রাত আটটা নাগাদ বাবা এবং মায়ের মধ্যে অশান্তি চলছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই কিশোরী। পুলিশ সূত্রের খবর, তার বাবা বচসা চলাকালীন মারধর করলে মা অচৈতন্য হয়ে যান বলে কিশোরী জানিয়েছে তদন্তকারীদের। তার পরে বাবা পালিয়ে যায় বলেও জানিয়েছে সে। ওই কিশোরীর চিৎকারেই প্রতিবেশীরা ছুটে এসে নাসিমাকে উদ্ধার করেন। পুলিশ আপাতত পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে মেয়েটির থাকার ব্যবস্থা করেছে। আদালতে তার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে নাসিমাকে। মৃত্যুর ঠিক কারণ জানতে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার কথা জানতে পেরে নাসিমার ভাই, দিদি-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বুধবার সকালে মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই কোয়ার্টার্সের দরজার তালা বন্ধ। এলাকাবাসীরা জানান, ঘটনার পরেই পুলিশ দরজা সিল করে দিয়েছে। ওই কিশোরীকে পুলিশ রাতেই সেখান থেকে নিয়ে যায়। এ দিন মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে থানায় যান তার পরিবারের অন্য সদস্যরা। নাসিমার ভাই জানান, দিদির বিয়ের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে সোহেলের গোলমাল চলছিল। কিন্তু পরিণতি এমন হবে, তা তাঁরা ভাবেননি। নাসিমার এক দিদি জানান, তিনি খবর পেয়ে এসেছেন। তাঁর অভিযোগ, বোনের মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি পুলিশ। এক পুলিশকর্তা জানান, কিশোরীর কথা শুনে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে সোহেলই স্ত্রীকে খুন করেছে। সে পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে। পলাতক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে জানান ওই পুলিশকর্তা।